মেহেরপুরে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজের সাথে একই জমিতে কচু

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:20 PM, 13 March 2022

মেহেরপুরে পেঁয়াজের সাথেই সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজের জমিতেই কচু চাষ করেছেন কৃষকরা। দেশের বিভিন্ন স্হানে কমবেশি পেঁয়াজ চাষ করা হলেও মেহেরপুরের কৃষকরাও কিন্তু এদিক থেকে পিছিয়ে নেই। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তুলনামূলক ভাবে ব্যাপক পেঁয়াজ চাষ করে থাকে মেহেরপুরের কৃষকরা।
মেহেরপুর জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার প্রায় সকল এলাকাতে পেঁয়াজের চাষ হলেও মুজিবনগর উপজেলায় পেঁয়াজ চাষ চোখে পড়ার মতো।
মেহেরপুরের মাটি সবজি চাষের জন্যে উপযোগী হওয়ায় প্রায় সকল ধরনের সবজি চাষ করা হয়ে থাকে এখানে।
সকল ধরনের সবজি চাষ করলেও পেঁয়াজের গুরুত্বও কম নয়। আর পেঁয়াজের সাথেই সাথী ফসল হিসেবে কচু কে বেছে নিয়েছে কৃষকরা।
মেহেরপুরে বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ চাষ করা হলেও সুখ সাগরের চাষ বেশি হয়ে থাকে। প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে ব্যয় হয় প্রায় ৪০/৪৫ হাজার টাকা। খরচ বেশি হবার কারণেই অনেকে পেঁয়াজ আর কচু একসাথে চাষ করে থাকে এতে করে বাজার দর ভালো হলে অনেক বেশি মুনাফা অর্জন করা যায়। তাছাড়া একটি ফসলের বাজার দর কম হলেও আরেকটিতে পুষিয়ে যায়। তাছাড়া কচুর বাজার দরও কম নয়। আগাম কচু তুলতে পারলে প্রতি কেজি কচু ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। সে হিসেবে সাথী ফসলে কচু ভালো হলে প্রচুর লাভবান হওয়া যায়।
একারণেই অনেক চাষিই এখন পেঁয়াজ চাষের সাথে কচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ১২০০ হেক্টর, গাংনী উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর এবং মুজিবনগর উপজেলায় ১৫০০ হেক্টর।
তবে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান, উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।
জেলায় কচু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৯০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে, গাংনী উপজেলায় ১৩০ হেক্টর এবং মুজিবনগর উপজেলায় ৪৬০ হেক্টর জমিতে।
তবে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজের সাথে একই জমিতে কচু চাষ করা হয়েছে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও অধিকাংশ কৃষকই এমন চাষ করেছেন। জেলার তেরঘরিয়া, শোলমারী, কেদারগন্জ, কোলা, আমদহসহ বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য জমিতে পেঁয়াজের সাথে কচু চাষ চোখে মেলে।
ইতিমধ্যেই জমি থেকে আগাম পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। অনেকেই সুখ সাগর জাতের পেঁয়াজ তুলছেন। পেঁয়াজের বাজার মূল্যও অনেক ভালো। এতে চাষিরা অনেক খুশি। গত ১ সপ্তাহ ধরে চাষিরা তাদের ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে আলগামন ও ট্রলিযোগে বাড়িতে ও বাজারে নেবার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।
কৃষকদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, পেঁয়াজের সাথে একই জমিতে কচু চাষের ক্ষেত্রে জমি থেকে পেঁয়াজ তুলতে কচু ফসলের তেমন একটা ক্ষতি হয়না।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিরা তাদের আশানুরূপ ফলন ও মূল্য পাবে বলে আশাবাদী।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, পেঁয়াজের সাথে একই জমিতে কচু চাষের জন্যে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা সকল ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন।

আপনার মতামত লিখুন :