হলুদ গালিচায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে স্বর্ণলতা

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:34 PM, 12 January 2024

প্রকৃতিতে সৌর্ন্দয্য বাড়িয়ে তোলা লতাগুলোর মধ্যে অন্যতম স্বর্ণলতা বা আলোকলতা। শুধুমাত্র সৌন্দর্য্য ছড়ানোই নয়, ওষুধের গুণাবলিও রয়েছে এই লতার। একটা সময় প্রায় সব জায়গায় এই আলোক লতা দেখা যেতো। এই লতাকে চেনে না এমন কোনো মানুষ নেই। কিন্তু এর নাম যে আলোক লতা তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই।
কাঁটা জাতীয় কুল গাছই মূলত এর প্রধান আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়াও সওড়া গাছের ডালে আলােক লতা দেখা যায়। একসময় গ্রামীণ পথের ধারে গাছে গাছে জালের মতো বিস্তার করতো এই আলোক লতা। কিন্তু দিনে দিনে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই লতা।

পৌষের শিশির ভেজা মৃদু বাতাসে মেহেরপুর জেলায় হলুদ রঙের গালিচায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে আলোক লতা। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে জেলার গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের হিন্দা গ্রামের পাঁকা সড়কের পাশে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঝুড়ি ঝুড়ি হলদে সুতা ঝুলে আছে। এর উপরে রোদ পড়লে চকচক করে। গ্রামে এখন খুব কমই দেখা যায় এই আলোক লতা।

তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বলেন, লােকমুখে শুনেছি আলোক লতায় ওষুধি গুণ আছে। মোটা লতা পিত্তজনিত রোগে, সরু লতা দুষিত ক্ষতে, ডায়াবেটিস ও জন্ডিস এবং বীজ কৃমি রােগ নিরাময়ের জন্য খাওয়ানো হতো। খোশপাঁচড়া রােগ নিরাময়েও ব্যবহার করা যায়। তবে বর্তমানে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। কারণ, এই আলােক লতা সব জায়গায় পাওয়া যায় না।

স্থানীয়রা জানান, আলোক লতা একটি পরজীবী উদ্ভিদ। গাছেই এর জন্ম, গাছেই এর বেড়ে ওঠা ও বংশ বিস্তার। কোনো পাতা নেই, লতাই এর দেহ-কাণ্ড-মূল। সোনালী রং এর চিকন লতার মতো বলে এইরূপ নামকরণ।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হােসেন বলেন, জীবন্ত গাছে জন্ম নিয়ে অলৌকিকভাবে পরগাছকে অবলম্বন করেই টিকে থাকে আলোক লতা। যেই গাছে জন্মায় সেই গাছের ডাল ও কাণ্ড থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে বংশ বিস্তার করে থাকে। পৌষ ও চৈত্র মাসে এই লতা বেড়ে উঠে ও জালের মতো বিস্তার ঘটায়। দেশে সর্বত্রই আলোক লতার জন্য উপযোগী আবাসস্থল। ফলে নির্ভরশীল গাছে আপন মনে জন্মায় আলোক লতা। এখন আলোক লতার ভরা মৌসুম। জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠার জন্য এর ডগা উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :