মেহেরপুরে মসুরি চাষে বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:27 PM, 25 February 2022

মেহেরপুরে ডাল শস্য মসুরি চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।মেহেরপুরের মাটি সবজিসহ সকল ধরনের ফসল চাষের জন্যে উপযোগী এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অনেকেই মসুর চাষ করে লাভের মুখ দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় ৭ হাজার ৮ শত ৫ হেক্টর জমিতে মসুর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে, মুজিবনগর উপজেলায় ৩ শত ৫ হেক্টর এবং গাংনী উপজেলায় ৫ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে মসুর চাষ করা হয়েছে।
একইসাথে ডাল শস্য উৎপাদনে কৃষি প্রণোদনা সহায়তা হিসেবে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণসহ সকল ধরনের পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে মেহেরপুর জেলার সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলার ২০০০ জন কৃষকের মাঝে এ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
আবাদের শুরু থেকে প্রচন্ড শীত আর কুয়াশা বেশি থাকলেও সবমিলিয়ে আবহাওয়া সহায়ক হওয়ায় মসুর চাষে তেমন একটা সমস্যা এখন পর্যন্ত হয়নি। ফলে কৃষকরা যে মসুর চাষে সাফল্য আশা করতে পারেন সে ব্যাপারে দ্বিমত নেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। কৃষক নিজেও মসুর ডাল চাষ করে যে লাভের মুখ দেখবেন, সে বিষয়েও তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের যাবতীয় পরামর্শ স্বাভাবিক ভাবেই কৃষকদের ডাল শস্য চাষে অনেকটাই লাভবান করে তুলবেন বলে কৃষকরা মনে করেন। যে সকল চাষিদের হাতে বিনামূল্যে বীজ তুলে দেওয়া হয়েছিল তাঁরা সকলেই চাষ করেছেন। চাষ করে তাঁরা সাফল্যের আশাও করছেন।
মেহেরপুরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজের সমাহার। রোগবালাই তেমন একটা চোখে মেলেনি। প্রচন্ড কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকার পরেও ক্ষতির মুখে পড়েননি কৃষকেরা এজন্য তাঁরা অনেক খুশি।
জেলার গাংনী উপজেলার তেঁতুল বাড়িয়া ইউনিয়নের সহড়াতলা গ্রামের মসুর চাষি সুজন মাহমুদ জানান, এভাবেই যদি মসুর ডাল চাষ করে সাফল্য আসতে পারে তাহলে উপকৃত হবে কৃষকেরাই। মেহেরপুরও মসুর ডাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে।

কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষ্ণীনারায়ণপুর গ্রামের চাষি মাহবুবুর রহমান জানান, ইতিপূর্বে কৃষি কর্মকর্তাদের খোজ খবর পাওয়া না গেলেও বর্তমানে সবজিসহ সকল ধরনের ফসল উৎপাদনে তিনারা বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। ফসল উৎপাদনেও লাভবান হচ্ছেন।

মাইলমারী গ্রামের চাষি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ জানান, মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তাগণ, একই সাথে ফসল উৎপাদনে নানা ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন কৃষকদের। এতে করে চাষিরা উৎসাহিত হচ্ছেন। এভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা অব্যাহত থাকলে চাষিরা তাদের আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে তিনি মনে করেন।

মাইলমারী গ্রামের মনিরুজ্জামান বলেন, ২ বিঘা মসুর আবাদ করেছি। কুয়াশা অব্যাহত থাকার পরেও মসুরের যে রুপ, এতে করে এবার ভালো ফলনের আশা করছেন। তবে একটি জমির মসুর লালচে বর্ণ হয়েছে বলেও তিনি জানান।

কাজীপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা গ্রামের চাষি ইউসুফ আলী বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মসুরের রোগবালাই কম। পোকার উপদ্রবও কম। আমি গত ৪ দিন পূর্বে কীটনাশক স্প্রে করেছি। কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে কবলিত না হলে আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে মনে করেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের হরিরামপুর গ্রামের চাষি আব্দুস সালাম জানান, বিগত বছরগুলোতে মসুর চাষ নানা রোগে আক্রান্ত হলেও এবার রোগবালাই তেমন একটা পরিলক্ষিত হয়নি। এতে করে বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদী।

শ্যামপুর ইউনিয়নের ঝাউ বাড়িয়া গ্রামের চাষি আব্দুল হান্নান জানান, মসুর ডাল উৎপাদনে খরচ কম, দামও ভালো। মাঠে মসুরের যে চেহারা তাতে করে বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

আপনার মতামত লিখুন :