প্রণোদনার বীজ নিয়ে বিপাকে গাংনীর পাটচাষী
প্রণোদনার বীজ নিয়ে বিপাকে গাংনীর পাটচাষী
প্রণোদনার বীজ নিয়ে বিপাকে গাংনীর পাটচাষী
পরিষদ থেকে কি বেচন (বীজ) যে দিল বুঝতি পারছি নি। দেড় মাস হলো পাটের বয়স আর এখনি ফুল ধইরি গিছে, পাট আর বাড়ছে না। অনেক ক্ষতি হয়ি গেল। আর এমন ধারা বেচন নিবো না। সরকারের দিয়া এ বেচন নষ্ট। পাশের আইলের পাট কত্ত বড় হয়িছে আর আমাগের পাট বাড়ছে না। এমনি আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন কৃষক হায়দার আলী। সে মেহেরপুরের গাংনীর হিজলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল হকের ছেলে। তার দুই বিঘা জমিতে বিএডিসির দেয়া পাটবীজ বপন করেছিলেন। কৃষি অফিসের কাছ থেকে বীজগুলো সরবরাহ করেছিল সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু অল্প দিনেই পাটগাছে ফুল এসেছে সেই সাথে বাড়ছে না। এতে অন্ততঃ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন তিনি। শুধু হায়দার আলীই নয়, তার মতো ইউনুস আলী, শরীফ আশরাফুল ও সামাদসহ অনেকেই এ ধরণের ক্ষতির স্বীকার। কৃষি অফিস বলছে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে এ সমস্যা থাকবে না।
কৃষক ইউনুস আলী জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বিঘা জমির জন্য পাটবীজ দেয়। ওই বীজ সময় মতো বপন করা হয়। প্রথম দিকে বীজ থেকে চারা গজালেও এখন ফুল ফুটেছে গাছে। আর বাড়ছেও না। জমি চাষ ও পরিচর্যা করে অন্ততঃ ১৫/১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবার এখন অন্য কোন ফসলও চাষ করার সময় নেই।
একই কথা জানালেন কৃষক সামাদ। তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে পাটবীজ বপন করেছিলেন। পাট বাড়ছে না আবার ফুল ও ফল ধরছে। কৃষি অফিস কোন খোঁজ খবর নেন না বা পরামর্শও দেয় না। অভিযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছে না। সার ও কীটনাশক দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।
সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে সাহারবাটি ইউনিয়নের ৫৬০ জন চাষিকে বীজ দেয়া হয়। সকলেই অভিযোগ করছেন তাদের পাটক্ষেতে ফুল ও ফল ধরেছে। বাড়ছেনা। এতে মোটা অংকের টাকা ক্ষতি হচ্ছে তাদের। এনিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভাতে আলোচনা করা হয়েছে। বৃষ্টি হলে ফুল ঝরে যাবে বলে দাবী করা হয়েছে। চাষি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে আগামীতে কেউ বিএডিসির পাটবীজ নিবে না।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। বেশি বৃষ্টিপাত হলে সমস্যা সমাধান হবে। কোন সার বা কীটনাশকে এর সমাধান নেই বলেও জানান তিনি। কৃষি অফিস কোন পরামর্শ দিচ্ছে না এমন অভিযোগের ব্যাপারে কোন জবাব মেলেনি।