মেহেরপুরে উঠতে শরু করেছে নতুন পেঁয়াজ , দাম নিয়ে হাতাশা

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:48 PM, 13 February 2022

ফয়সাল আহম্মেদঃসবজী জেলা খ্যাত মেহেরপুরে এবারও পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। সুখ সাগর, তাহেরপুরি ও দেশি (ডমনা) জাতের পেঁয়াজের ফলন হয়েছে বেশ ভালো। পাইকারি ও খোলা বাজারে দেখা মিলছে নতুন পেঁয়াজের। তবে দাম নিয়ে হাতাশ জেলার চাষিরা। কাচা পেঁয়াজ পাইকারি মাত্র ১৬.৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। বিঘা প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৮ হাজার টাকায়। অথচ বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ দাড়াই প্রায় ৩০ হাজার টাকা। লাভের আশায় পেঁয়াজ চাষ করে কাঙ্খিত দাম না পেয়ে অনেকেই বলেছেন, পেঁয়াজ চাষ আর করবো না। বিগত বছরে

শীতকালীন সময়ে সুখসাগর ও দেশীয় পিঁয়াজের চাষ করে মেহেরপুরে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু গেল কয়েক বছর ধরে ভরা মৌসূমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমাদানি (এলসি) হওয়ায় লোকসানের মুখে চাষিরা। এবারও দাম না থাকায় পেঁয়াজ উত্তোলন করতে হিমশিম খাচ্ছে চাষিরা।
চাষিরা বলেছে, প্রতি বছরই ভরা মৌসূমে বাইরের দেশ থেকে প্রচুর পরিমান পেয়াঁজ আমদানি করা হয়। যার প্রভাব পড়েছে এ জেলায়। প্রায় ১০ বছর আগে ভারত থেকে সুখসাগর ও তাহেরপুরী পেঁয়াজের বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার কৃষকরা। কয়েক বছর ধরে এ জেলার কৃষকরা নিজস্ব প্রযুক্তিতেই বীজ তৈরি করে সুখসাগর পেঁয়াজের চাষ করছেন । এই পেঁয়াজ দেশীয় পেঁয়াজের চেয়ে আকারে দুই থেকে তিন গুণ বড়। পেঁয়াজের মৌসুমে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজার দখল করে মেহেরপুরে উৎপাদিত এই সুখসাগর পেঁয়াজ। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় পেঁয়াজ চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। এ জাতের মধ্যে সুখসাগরই চাষ হয়েছে ২ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে। গত বছরে জেলায় ২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল।
মেহেরপুর সদর উপজেলার চকশ্যামনগর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি বিল্লাল হোসেন বলেন, গত বছর বিঘা প্রতি মাত্র ৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। এবারও একই অবস্থা। কাঙ্খিত দাম না পেলে পেয়াজ চাষে আগ্রহ হারাবে অনেকে বলে দাবি করেন এই চাষি।
মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের চাষি এরশাদ আলী বলেন, বীজের দাম বেশি। ৪ হাজার টাকা মন বীজ কিনতে হয়েছে। এছাড়াও সার-পানি মিলে উৎপাদন খরচ দাড়াই প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ১৬-১৭ টাকা কেজি।
পেঁয়াজ সংরক্ষনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় তবে লাভবান হবেন এ অঞ্চলের চাষিরা, এমনটাই দাবি করেন পেয়াজ চাষি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য ডালিম হোসেন।
মেহেরপুর বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম খোকন বলেন, প্রতিটি ফসলের ক্ষেত্রেই ভরা মৌসুমে দাম কম থাকে। তবে পেঁয়াজ অত্যন্ত গুরুত্বকপূর্ণ মসলা। যার চাহিদা থাকে সারা বছর। তাই পেঁয়াজ সংরক্ষনাগার যদি মেহেরপুরে তৈরি করা যায় তবে অফ সিজনে বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হতে পারে আমাদের কৃষকরা।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, মেহেরপুরের উৎপাতি পেয়াজের মান ভালো এবং ফলনও ভালো। সারা দেশে এ জাতের পেঁয়াজের চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের লোকসানের কথা মাথায় রেখে পেয়াজ সংরক্ষনের জন্য গবেষনা অব্যহত আছে বলেও জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :