মন্ত্রী মুরাদের শাস্তি আবরার হত্যার বিচার ও আইনের শাসন

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  10:49 AM, 10 December 2021

একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ ছিল খুনী, অপরাধীদের অভয়ারণ্য। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধীরা নির্ভয়ে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াত। ৭৪ সালের এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেভেন মার্ডারের ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত হিসেবে তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিউল আলম প্রধানের নাম আলোচনায় উঠে এসেছিল। রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদকের পদ থেকে শফিউল আলম প্রধানকে বহিস্কার করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বিচারের রায়ে তার মৃত্যুদন্ড হয়েছিল। ১৫ ই আগস্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকান্ডের আগ পর্যন্ত জেলে ছিলেন শফিউল আলম প্রধান। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রেক্ষাপট বদলে যায়। শুরু হয় খুনি, অপরাধী, সন্ত্রাসীদের দলে ভেড়ানোর নিকৃষ্ট প্রতিযোগিতা।

অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া সরকারের বিশেষ বদান্যতায় সরকারকে সমর্থনের বিনিময়ে হত্যা মামলার আসামিরা ও ছাড়া পেয়ে যান। হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত​ শফিউল আলম প্রধানকে বিশেষ বিবেচনায় সাজা মওকুফ করা হয়। জেল থেকে ছাড়া পান, রাজনীতি করার সুযোগ ও পান। আইনের শাসন ভুলুন্ঠিত হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং কারাঅভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতা হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দিতে সংসদে আইন পাশ করা হয়। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধান স্থগিত করে মার্শাল ল জারি করা হয়। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে রাজাকার তোষণের কারফিউ গণতন্ত্র চালু করা হয়। রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। হ্যাঁ না ভোটের আজব গণতন্ত্র চালু করা হয়। সেই অবস্থা থেকে দেশকে পুনরায় আইনের শাসনের পথে ফিরিয়ে আনেন বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসুরি বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। আজকের বাংলাদেশে অপরাধ করে কেউ পার পায় না।

বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানের কিছু অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ এবং বিতর্কিত মন্তব্য। একজন মন্ত্রী হিসেবে তার শব্দ চয়ন, কথা বলার ধরণ এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ জাতিকে বিব্রত করেছে। মাননীয়​ প্রধানমন্ত্রী দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাকে মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামীলীগ এবং সরিষাবাড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ থেকেও বহিস্কৃত হয়েছেন। অতীতে আওয়ামীলীগের বর্ষীয়ান নেতা দলের দূর্দিনের কান্ডারী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জননেতা লতিফ সিদ্দিকী মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বক্তব্য রাখার কারনে দল এবং মন্ত্রীত্ব থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। এভাবে আওয়ামীলীগ সবসময়​ অপরাধী এবং অন্যায়কারীকে দল, মতের উর্ধ্বে থেকে শাস্তি নিশ্চিত করেছে।

আজকে আমি যখন আর্টিকেলটা লিখতে বসেছি ঠিক একদিন আগে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকান্ডের বিচারের রায় হয়েছে। হত্যাকান্ডের প্রায় ২৬ মাসের মাথায় বিচারের রায় হল। আবরার হত্যার পর অনেকেই সন্দিহান ছিলেন বিচার হবে কিনা। অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে কিনা। আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচার হয়েছে। অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পেয়েছে। বিশ জনের মৃত্যুদন্ড এবং পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্তদের অনেকেই সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের সাথে জড়িত। আবরারের মত সাজাপ্রাপ্ত ২৫ জন ও বুয়েটের মেধাবী ছাত্র।

অতীতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদকে ক্রসফায়ারের নামে নির্মমভাবে হত্যার পর সরকারবিরোধীরা নানা অপপ্রচার করেছিল একটি গোষ্ঠী। দেশবিরোধী অপচক্র দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির সুস্পষ্ট অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। অপরাধী পুলিশের ওসি প্রদীপ কুমার দাস সম্পর্কে একটি মহল অপপ্রচার করে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর অপচেষ্টা চালিয়েছিল। অপরাধীর পরিচয় অপরাধী। সে কোন ধর্মের অনুসারী সেটি মূখ্য বিষয় হতে পারে না। দেশবিরোধী একটি গোষ্ঠী সরকারের বিরোধীতা করতে গিয়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে ভারতীয় নাগরিক বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মনগড়া প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল। সরকারের সহায়তায় ওসি প্রদীপ বিদেশে চলে গেছে এমন প্রচার ও করা হয়েছিল সে সময়। ঐ অপচক্রের ভাষায় ওসি প্রদীপ যেহেতু ভারতের এজেন্ট সেহেতু সরকার তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারবেনা মর্মেও ঘটনার পর কয়েকদিন প্রচার চালানো হয়। ওসি প্রদীপ এখন কারাগারে আছে। মেজর সিনহা হত্যার বিচার চলছে।

এই সরকারের আমলেই বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় হাজার হাজার বিডিআর জওয়ানের আদালতের রায়ে শাস্তি হয়েছে। হাজার হাজার জওয়ান চাকুরীচ্যূত হয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এই সরকারের আমলে ২১ শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পুলিশের ৩ জন সাবেক আইজিপি শহুদুল হক, মোহাম্মদ আশরাফুল হুদা এবং খোদাবক্স চৌধুরী সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে আছেন। সাবেক ডিজিএফআই প্রধান মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই এর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রহিম সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের রায় মাথায় নিয়ে এখন কারাগারে। সর্বোচ্চ আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছেন। বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় নিয়ে বিদেশে পলাতক জীবন যাপন করছেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ৬ আসামির ফাঁসি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে কার্যকর হয়েছে। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত বাকি আসামীরা বিদেশে পলাতক আছে। তাদেরকেও দেশে ফিরিয়ে আনার সব রকমের কুটনৈতিক প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। অথচ এদেশের মানুষ একসময় ভাবত বাংলাদেশের মাটিতে এদের বিচার কোনদিন হবে না। কারন এই স্বঘোষিত ঘৃণ্য অপরাধীদেরকে খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়া,​ জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা-নিজামীরা ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের আওতার বাইরে রেখে প্রটেকশন দিয়েছে। বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে। নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে, এমপি বানিয়েছে, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বানিয়েছে। আইনের শাসনকে ভুলুন্ঠিত করেছে। এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

অথচ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারই তাদের প্রচলিত আইনে বিচার করেছে। আদালতের রায়েই তাদের শাস্তি হয়েছে।একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে​ যুদ্ধাপরাধ করা মানবতাবিরোধী অপরাধী কুখ্যাত গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ, সাকা চৌধুরী, আব্দুল আলিম, কামারুজ্জামান, মীর কাশিম, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী গংদের আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ড কিংবা যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে।অনেকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে।কেউ কেউ সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারে বন্দী অবস্থায় বয়সজনিত কারনে মৃত্যুবরণ করেছেন। আবার কেউ কেউ কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। অথচ মাত্র এক যুগ আগেও কেউ ভাবতে পারেনি যে​ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কোনদিন এদেশের মাটিতে হবে। শেখ হাসিনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবতাবিরোধীদের বিচার করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধীদের বিচার করে তিনি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। এদেশে আইনের শাসন এবং ন্যায় বিচারের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খুনী মোস্তাক, জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা-নিজামীদের দ্বারা যা ভূলুন্ঠিত হয়েছিল।

২০১৪ সালের এপ্রিলে নারায়নগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সেভেন মার্ডারের ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মামলায় অভিযুক্ত র্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ তৎকালীন প্রভাবশালী মন্ত্রী মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা হওয়ায় এবং নূর হোসেন সরকারী দলের কাউন্সিলর হওয়ায় তাদের কিছুই হবে না বলে বিভিন্ন মনগড়া অপপ্রচার করেছিল সরকারবিরোধী শক্তি। কিন্তু ঐ মামলায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ সহ ১৬ জন র্যাব কর্মকর্তা ও কাউন্সিলর নূর হোসেনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। আসামীদের সবাই এখন কারাগারে বন্দি আছেন।

চাঞ্চল্যকর বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতা শাকিল ও রাজনের মৃত্যুদন্ড এবং পনের জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড বহাল আছে।সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা বা কর্মি হওয়ার পরেও সরকার কিংবা আদালত তাদের প্রতি কোন ধরনের অনুকম্পা দেখায়নি। সিলেটের চাঞ্চল্যকর শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী সহ চারজনের মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছে আদালত। এই মামলার প্রধান আসামী হত্যাকান্ডের পর সৌদি আরব পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে অল্পদিনের মাথায় সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় তাকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। খুলনার শিশু রাকিবকে কম্প্রেশার মেশিনের সাহায্যে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে নিম্ন আদালতে রায় দেওয়া হয়।।এই মামলার প্রধান দুই আসামীকে আদালত মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছে। ফেনীর চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলায় প্রধান আসামী মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা এবং সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রুহুল আমিন সহ ১৬ আসামীকে মৃত্যুদন্ড এবং ওসি মোয়াজ্জেমকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৮ বছরের কারাদন্ড এবং দশ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এগুলো কি আইনের শাসনের নমুনা নয়?

ডিআইজি মিজানুর রহমান এবং দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারীর অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং তাদেরকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় স্ত্রী মিন্নি সহ অপরাধীরা বিচারের আওতায় আছে। প্রধান আসামী নয়ন বন্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে। চট্টগ্রামের এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার আসামি পুলিশের বহিস্কৃত এসপি বাবুল আকতার সহ অন্য আসামীরা কারাগারে আছে।বিচারকার্য প্রায় সমাপ্তির পথে।সরকারের গত মেয়াদে দু’জন প্রভাবশালী মন্ত্রী ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে এখতিয়ার বহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ায় আদালত অবমাননার দায়ে আদালতে তলব করা হয়েছিল। আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে রেহাই পান।

শেখ হাসিনার গত সরকারের আমলে দুদকের মামলায় ককক্সবাজারের আলোচিত এমপি আব্দুর রহমান বদির তিন বছরের কারাদন্ড হয়েছিল।এমপি থাকা অবস্থায় তাকে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকতে হয়েছে। বর্তমানে জামিনে আছেন। টাঙ্গাইলের গত সংসদের এমপি আমানুর রহমান খান রানা একটি হত্যা মামলায় এমপি থাকা অবস্থায় টানা ৩৪ মাস জেলে ছিলেন। অতঃপর জামিন পান। গত সরকারের আমলে পাবনার ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর পুত্র উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফকে চার সাংবাদিক পেটানোর মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন।বাংলাদেশে একজন মন্ত্রীর ছেলের অপরাধ করে জেলে যাওয়ার নজির কি অতীতে ছিল? অনেক সাবেক মন্ত্রী, এমপি এবং আমলার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা চলমান রয়েছে। চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি, সেক্রেটারিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।যদিও সেই অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয় নি। ক্যাসিনো কান্ডে নাম আসায় যুবলীগ চেয়ারম্যানকে এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি,​ সেক্রেটারিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া আছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি জনপ্রিয় যুবনেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এখনও জেলে। অতি সম্প্রতি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় মেয়র গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র এবং দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তার বিতর্কিত অডিও ফাঁস হওয়ার কারনে। বাংলাদেশে অতীতে সরকারি দলের নেতারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, রাহাজানি করলেও কি এভাবে তাদের আইনের আওতায় কখনও আনা হয়েছে? এ ধরনের নজির একমাত্র বঙ্গবন্ধু এবং তার কন্যা শেখ হাসিনা স্থাপন করেছেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার​ সরকারের আমলে কোন প্রভাবশালীকে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনার টানা তিন মেয়াদের প্রায় তের বছরের শাসনামলে অপরাধ করে কেউ পার পায়নি। দেশের মানুষ এ সবকিছুর প্রত্যক্ষদর্শী। এ কারনে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি মানুষের পরিপূর্ণ আস্থা আছে। সুতরাং গুটিকয়েক অপপ্রচারকারী, ষড়যন্ত্রকারীর কোন ধরনের চক্রান্ত, সাম্প্রদায়িক উস্কানি কিংবা সারাজীবনের অস্ত্র ভারতবিরোধী, ভারতবিদ্বেষী অপপ্রচারে মানুষ এখন আর বিভ্রান্ত হন না। চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র আর অপপ্রচারের পথ থেকে সরে এসে তাই সবার উচিত শেখ হাসিনার উন্নয়ন, সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়া। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রত্যক্ষভাবে না পারলেও অন্তত অনুঘটক হিসেবে কাজ করা।

 তরুণ কলাম লেখকঃমোঃ নজরুল ইসলাম

আপনার মতামত লিখুন :