ব্যস্ত সময় পার করছেন গাংনীর কামাররা

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  02:03 PM, 13 June 2023

আর ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা। এ উপলক্ষে মেহেরপুরের গাংনীর কামাররা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন।সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দম ফেলানোর ফুসরত থাকছে না তাদের। দিনরাত কোরবানীর পশুর জবাই ও কাটার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি ও সান দিতেই দেখা যায়। কামারশালার টুং-টাং শব্দে উদ্দীপ্ত মুর্ছনার সৃষ্টি হয়। কামার পরিবাররা এ সময়টার জন্যই দিনগুনে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকদিয়া, ষোলটাকা, বামন্দি গাংনীসহ বিভিন্ন বাজারে কামার শালায় কামাররা বিরতিহীনভাবে কাজ করছেন। ঈদ উপলক্ষ্যে মুসলমানরা কোরবানীর পশু জবাইয়ের জন্য চোরা, দা, বটিসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী লোনা পানিতে সান দেওয়া এবং নতুন কিছু কেনা নিয়ে ব্যস্ত। সে লক্ষে কামাররা ও কোরবানীর ঈদ আসলে পুরো বছরের অর্থ পুষিয়ে নেন।
গাংনীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের দা, ছুরি, চাপাতি, কুড়াল তৈরি ও শান দেয়ার কাজ। অনেক কামার নতুন কাজ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। যদিও বছরের অন্য সময় তাদের কাজের তেমন চাপ থাকে না। এই সময় কাজের চাপ বেশি হওয়ায় অনেক স্থানে দেখা মিলছে মৌসুমি কামারের। বছরের প্রায় সময় কাজ না থাকায় জেলার অনেক কামার এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। তারাও এ মৌসুমটা কাজে লাগাচ্ছে।
মানিকদিয়ার বুদু কামার জানান, প্রতি বছর এক ঈদ মৌসুমেই যত কেনাবেচার ধূম। আর এ থেকে অর্জিত টাকা আর অন্য কাজ করে টাকা দিয়েই সারা বছর সংসার চালাতে হয়। কোরবানি ঈদ এলে কাজ বেড়ে যায়। ছোট ছুরি থেকে শুরু করে বড় ছুরি ও দাসায় শাণ দেয়ার জন্য ৩০ টাকা থকে ৮০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। আবার নতুন ধারালেঅ অস্ত্র তৈরী করে বাজারে বিক্রি করা হয়। রকম ভেদে বিভিন্ন অস্ত্রের দাম ভিন্ন ভিন্ন। ৫৫ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকার ধারালো অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে যেগুলো কোরবানীর পশু জবাই, চামড়া ও মাংস ছাড়ানো ছাড়াও দৈনন্দিন কাজে লাগবে।
কামার শিল্পী জীবন কর্মকার ও সুমন কর্মকার জানান, এক সময় কামারদের যে কদর ছিল বর্তমানে তা আর নেই। মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষণ হারাচ্ছে। হয়তো বা এক সময় এই পেশা আর থাকবে না। তবে কোরবানির ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই। এ সময় আমাদের রোজগার ভাল হয়।
বাজারে দেখা গেছে, কামারদের তৈরী বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। সাইজ ও ওজন ভেদে দাম একেক রকম। একটা দা দেড়শ টাকা থেকে পঁাচশ টাকা, ছোট ছুরি ৫০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা, বড় ছুরি আড়াইশ টাকা থেকে তিনশ টাকা। কয়লা আর লোহা ইস্পাতের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের তৈরী অস্ত্রের দামও বেশি হাকতে হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :