জঙ্গলে ঘেরা গাংনী উপজেলা চত্বরে শিশু পার্ক

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:06 AM, 27 April 2022

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) সরকারি বাসভবনের সামনে ১৯৮৪ সালের দিকে শিশু পার্কের জন্য স্থান নির্ধারন হয়েছিল এবং পরবর্তীতে সমসাময়িক সময়ে নির্মিত হয়েছিল একটি শিশু পার্ক। সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার শিশু, কিশোর এবং তরুণ সমাজকে মাদক ছেড়ে আলোর পথে আনার প্রত্যয়ে শিশু পার্কটি নির্মিত হয়েছিল বলে জানা যায়।

কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে অবহেলা অযত্নে পড়ে রয়েছে শিশু পার্কটি। শিশু পার্কের মধ্যে জন্ম নিয়েছে জংলী গাছগাছালি। বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে শিশু পার্কটির মধ্যে। একসময় শিশু পার্কটিতে দোলনা সহ নানান ধরনের বিনোদন মূলক সাজ-সরাঞ্জম এবং বেশি কয়েকটি বসার বেঞ্চ ছিলো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সৌন্দর্য হারিয়ে পড়ে রয়েছে শিশু পার্কটি। এখন আর কেউ আসেনা শিশু পার্কে, বসেও না বেঞ্চে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে আর কোন অভিভাবক দোলনায় দোল খেলাতে আসেনা। শিশু পার্কটির মধ্যে বিনোদন উপভোগ করার সুযোগ এখন শূন্য অবস্থায়। বিভিন্ন ধরনের জংলী গাছগাছালি আর প্রচন্ড অপরিষ্কারাচ্ছন্ন হয়ে অভিভাবকহীন রয়েছে শিশু পার্কটি।

বর্তমান সময়ে বিভিন্ন মোবাইল গেম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্ত হয়ে কেউ আর পার্কে যায়না এমন মন্তব্য করে অনেকে দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও সচেতন মহল মনে করেন সমস্ত অনৈতিক কর্মকান্ড ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্ত কমানো এবং মাদকাসক্ত মুক্ত যুবসমাজ গঠনে শিশু পার্কের কোন বিকল্প নেই। শিশু পার্কে, খেলার মাঠে সময় কাটানোর মধ্যে দিয়ে যুবসমাজ অন্ধকার থেকে আলোর পথে আসে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি বাসভবনের ঠিক সামনেই শিশু পার্কটি এমন বেহাল দশায় থাকলেও এখন পর্যন্ত পুনরায় সংষ্কার কাজের উদ্যেগ নেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতার সাথে। গাংনী পৌরসভার বাসিন্দা এবং ছাত্রলীগ নেতা তিশান চঞ্চল বলেন, ‘উপজেলার মধ্যে অবস্থিত শিশু পার্কটি পুনরায় সংষ্কার করা প্রয়োজন। সংষ্কার করে পুনরায় বিনোদন ক্ষেত্র করে তোলা সময় উপযোগী বিষয়।’

গাংনী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিরুল ইসলাম মহন বলেন,’ গাংনী উপজেলা পরিষদের মধ্যে শিশু পার্কটি শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশু পার্কটি শিশুদের নানা রাইড রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে যেটা অত্যন্ত দুঃখ জনক।

তিনি আরো বলেন, ‘পার্কটি পুনরায় শিশুদের চিত্তবিনোদন এর স্থান হিসেবে ফিরিয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাঈদ আনোয়ার বলেন,’ শিশু পার্কটি পুনরায় সংস্কার এবং আধুনিকায়ন করার দরকার। যত দ্রুত সম্ভব সংষ্কার কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।’শিশু পার্কটির এমন বেহাল অবস্থাকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেন সচেতন নাগরিক ডা. সজীব উদ্দিন স্বাধীন।

বেশ কয়েকজন ক্রিড়া প্রেমিদের সাথে কথা হয় তারা জানান, গাংনী উপজেলায় শিশুদের বিনোদনের জায়গা নেই। একমাত্র শিশুপার্কটিও খেলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পার্কটি সংস্কার করে শিশুদের খেলার উপযোগী করার দাবি তাদেরও।এবিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানমের সাথে কথা বলতে তার ব্যবহৃত সরকারি নাম্বারে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আপনার মতামত লিখুন :