হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে হুহু করে বাড়ছে পানি

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:43 PM, 05 July 2021

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পদ্মা নদীতে হুহু করে বাড়ছে পানি।ফলে পানিতে জমি ও ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।

সোমবার (০৫ জুলাই) বিকেল ৫টায় দিকে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৪শ’৮৫ সেন্টিমিটার। গতকাল পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৩শ’৬৫ সেন্টিমিটার। ২৪ঘন্টায় পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ১২ সেন্টিমিটার করে।

ভেড়ামারা উপজেলার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে এসব এলাকার বীজতলা, সবজিবাগান, পাট,বাদাম,আখ ও তিলক্ষেত এবং কলার বাগান।

পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, সোমবার বিকেল ৫টায় পাকশীর পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পরিমাপ করে প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৭শ’১৩ কিউসেক। পানির এই বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বলে জানান তিনি। গত বছর ৫ জুলাই/২০ পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৯৭ সেন্টিমিটার। পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ঐ সময় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭শ’ কিউসেক। গত বারের তুলনায় এবার পদ্মায় দ্রæতগতিতে পানি আসছে।যার ফলে পানির ফ্লোমাত্রা অনেক বেশী। এ বছর এই সময়ে পদ্মার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বর্ষার আগেই বিপৎসীমার কাছাকাছি গিয়ে ঠেকতে পাওে বলে ধারোনা করা হচ্ছে। এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পদ্মার কিনারায় চরএলাকার অসংখ্য কৃষকের আবাদ করা ফসল এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে।

হাইড্রোলজি বিভাগের পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, উজানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে এ বছর বর্ষার আগেই পদ্মা নদীতে পানি দ্রæত গতিতে বাড়তে শুরু করছে।
তবে পানি বৃদ্ধি পেলেও এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ১৩ দশমিক ২৫ মিটার বিপৎসীমা, যার অনেক নিচ দিয়ে এখন নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে পদ্মা নদীর আগাম পানি বৃদ্ধির ফলে, আগাম বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

পদ্মা তীরবর্তী গোরাপ নগর এলাকার নৌকার মাঝি হাসমত আলী বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে, নৌকা চালানো অনেক সহজ হয়েছে ।
এদিকে পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে, নদী ফিরতে শুরু করেছে তার আপন শোভায়, পানি বাড়ার সাথে সাথে ফুটে উঠছে নদীর সৌন্দর্য। নদীর সৌন্দর্য দেখতে অনেকেই নদী তীরে ঘুরতে আসছেন। প্রতিদিন বিকেলে পদ্মা পাড়ে ভীড় জমাচ্ছে মানুষ।

কৃষক আমিনুর ইসলাম জানান, কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে এমনিতেই মাঠের শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ওপর পদ্মায় হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। শত শত কৃষক ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন।

ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শায়খুল ইসলামের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর নদী দ্রæত পানি আসছে। পদ্মার চরাঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের আবাদকৃত প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে। নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বিস্তৃীর্ণ এলাকার আবাদি ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
চর গোলাপ নগর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, চরে আমার ৩ বিঘা জমির ফসল পুরোটাই এখন পানিতে থৈথৈ করছে।

কৃষক হেলাল উদ্দীন জানান, এ বছর তেমন বন্যা না হওয়ায় চরের ৫ বিঘা জমিতে আগাম মাষকলাই চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পদ্মার পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ফসল তলিয়ে গেছে।

আপনার মতামত লিখুন :