গাংনীতে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে শিশুকে বিবস্ত্র করে বাবা-মায়ের সামনে গাছে বেঁধে নির্যাতন
মেহেরপুরের গাংনীতে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে বাদল হোসেন(১২) নামের এক শিশুকে বাবা-মায়ের সামনে গাছে বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে শিশুটির পরিবার। গতকাল মঙ্গলবার(০৮ফেব্রুয়ারি) ১১টার দিকে শিশুটিকে ৭হাজার টাকা চুরির অপরাধে আদম ব্যবসায়ী পলাশ হোসেন তাকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন শিশুটি মা আশরাফিয়া খাতুন।আহত বাদল গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়ানের মহাম্মদপুর গ্রামের গাইনপাড়া ভাদু হোসেনের ছেলে ও হাজী ভরষউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,৭ হাজার টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে বাদল হোসেন নামের এক শিশুকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে পলাশ নামের এক আদম ব্যবসায়ী। পলাশ ও বাদল সম্পর্কে মামাতো ভাই হয়। প্রথম অবস্থায় আমরা এগিয়ে না গেলেও বাদলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উদ্ধার করে আমরা হাসপাতাল এ পাঠিয়েছি।
শিশুর মা আশফিয়ারা খাতুন জানান, আমার ননদের ছেলে আদম ব্যবসায়ী পলাশ হোসেন(৩০)এর ৭হাজার টাকা চুরি হয়ে গেছে। আমার ছেলে বাদল হোসেনকে সেই টাকা চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের সামনে তাকে জামাপ্যান্ট খুলে বিবস্ত্র করে গাছে বেঁধে বেধড়ক নির্যাতন করে। পেটাতে পেটাতে একটি গাছের ডাল ভেঙ্গে গেলে পরে পলাশের মা হামিদা খাতুন আরো একটি গাছের ডাল এনে দেয় বাদলকে পেটানোর জন্য। পলাশ ক্ষমতাশালী হাওয়াই আমি এবং আমার স্বামীর সামনে নির্যাতন করায় ভয়ে কিছু বলতে পারিনি। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে মুহূর্ত অবস্থায় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।শিশুটির মা আরও জানান, আদম ব্যাপারী পলাশ এর আগে একটি মামলায় জেল খেটে বাড়িতে এসেছে। এব্যাপারে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে আদম ব্যবসায়ী পলাশ হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বাদল আমার মামাতো ভাই, সে প্রায় সময় আমার দোকান থেকে ৫’শ, ১হাজার টাকা চুরি করে। গত রবিবার(০৬ফেব্রুয়ারি) আমার মামা ভাদু হোসেনকে বিষয়টি বলেছি। গতকাল মঙ্গলবার(০৮ফেব্রুয়ারি) দোকানে পণ্য কেনার জন্য আমি ৬হাজার টাকা রাখে চুল কাটতে যায়। সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে বাদল বাড়ির সীমানা প্রাচীরের উপর দিয়ে এসে টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তাকে ধরে এনে আমার বাবা মায়ের সামনে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় মেরেছি। এতে শরীরে কয়েকটি স্থানে কেটে গেছে। তাকে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে আহত করা হয়নি।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটি অফিসার ডাক্তার হামিদুল ইসলাম জানান, শিশুটির শরীরে ফোলা জখমের দাগ রয়েছে। তবে বর্তমানে সে আশংকার বাইরে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।বাদল বর্তমানে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ড এর ৫নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই,এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি,লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।