মেহেরপুর মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিকে অবৈধ গর্ভপাতে মৃত্যু শয্যায় প্রেমিকা ॥ আত্মগোপনে প্রেমিক কামাল

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  02:45 PM, 28 May 2021

মেহেরপুরের মেডিপ্যাথ নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রেমিকার অকাল গর্ভপাত ঘটিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রেমিক কামাল হোসেন।বিজ্ঞাপনঃ

গর্ভপাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সেই প্রেমিকা হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।এদিকে অকাল ভুমিষ্ট হয়ে মৃত্যু বরণ করা বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে গাংনী থানা পুলিশ।

ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছে প্রেমিকবর গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি কামাল হোসেন। আর সমালোচনায় পড়েছে সাত মাসের অবৈধ গর্ভপাত ঘটানো ডায়গনস্টিক সেন্টার মেডিপ্যাথ।

ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের অভিযোগ, কাঠ মিস্ত্রি কামাল হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক হয় ওই নারীর সাথে। এক পর্যায়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি। নিজের অপকর্ম ঢাকতে কৌশলে মেয়েটিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুর শহরের কাটাইখানার সামনে মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটায়। প্রচুর রক্ত ক্ষরণে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফেলে পালিয়ে যায় কামাল হোসেন।

সেইসাথে ডায়গনস্টিক কর্তৃপক্ষ অবৈধ কর্মকাণ্ড ঢাকতে কৌশলে গর্ভপাত ঘটানো নারীকে মৃত বাচ্চাসহ তাড়িয়ে দেয়।

ওই নারী জানান, একটি কাগজে সই করিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে কামাল দাবি করলেও এর কোন কাগজ তাকে দেওয়া হয়নি। এর পর থেকেই তারা স্বামী স্ত্রী হিসেবে গোপনে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। স্ত্রী হিসেবে পারিবারিক ও সামাজিক স্বীকৃতি চাইলে বার বার কৌশলে এড়িয়ে গেছেন কামাল। বিয়ের কোন কাগজপত্র তার কাছে না থাকায় কামালের বাড়ি উঠা ছাড়া কোন উপায় ছিল না বলে জানান ওই নারী ও তার পরিবারের লোকজন।ওই নারীর এক বোন যিনি সার্বক্ষণিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ছিলেন।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, চেকআপ করার কথা বলে আমার বোনকে মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে আসে। কামাল হোসেন আগে থেকেই ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষের সাথে গর্ভপাত ঘটানোর আলাপ সেরে রেখেছিলেন। সেখানে কর্মরত সেলিম রেজা যিনি নিজেকে ডাক্তার দাবি করে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ইনজেকশন দেন।

ইনজেকশন দেওয়ার পরেই আমার বোনের পেটে তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। যখন গর্ভপাত ঘটে তখন আমি এ বিষয়টি বুঝতে পারি। প্রতারণা টের পেয়েই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে খবর দেয়। কিন্তু বাচ্চাটিকে বাঁচানোর জন্য আমাদের আর কিছুই করার ছিল না।

এদিকে নিরুপায় হয়ে প্রেমিকা বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কামাল হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল সেখান থেকে বাচ্চাটি উদ্ধার করে। একই সাথে অসুস্থ নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা।ওই নারীর কাছে মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিত সেন্টারের ব্যবাস্থাপত্র ও রিপোর্ট রয়েছে। ব্যবস্থাপত্রে নাম রয়েছে ডা: সেলিম রেজা।

যিনি প্যারামেডিক এবং বিভিন্ন রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক বলে দাবি করেছেন। এরকম একজন ব্যাক্তি কীভাবে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছেন আর ব্যবস্থাপত্রে নিজেকে ডা: দাবি করছেন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।মোবাইলে যোগাযোগ করলে ওই ডায়াগনস্টিকের পরিচালক পরিচয়দানকারী ইমরান হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে আপনাদেরকে জানাবো।

অবৈধ গর্ভপাত ও প্রতারণার বিষয়ে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডাঃ নাসির উদ্দীন বলেন, খোঁজ নিয়ে ওই ডায়গনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অকাল গর্ভপাতের বাচ্চা উদ্ধারকারী গাংনী থানার এসআই জহির রায়হান জানান, মরদেহ সুরতহাল করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

আপনার মতামত লিখুন :