মেহেরপুর বন্ধুসভার পাঠচক্র লালন ফকির এক নিঃসঙ্গ সাধক

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  01:25 PM, 09 March 2024

লালন ফকির ছিলেন একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক ও দার্শনিক। তাঁর গানের মধ্যে সন্ধান পাওয়া যায় এক বিরল মানব দর্শনের।

লালন শাহ, যিনি লালন ফকির বা লালন সাঁই নামেও পরিচিত, তিনি মৃত্যুর শতবর্ষ পর আজও বেঁচে আছেন তাঁর গানের মাঝে। তাঁর লেখা গানের কোন পাণ্ডুলিপি ছিল না, কিন্তু গ্রাম বাংলায় আধ্যাত্মিক ভাবধারায় তাঁর রচিত গান ছড়িয়ে পড়ে লোকের মুখে মুখে। আজ শনিবার সকাল ১১টায় সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বশির আহমেদের সঞ্চালনায় প্রথম আলো মেহেরপুর বন্ধুসভার আয়োজনে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মিলনাতনে লালন ফকির এক নিঃসঙ্গ সাধক বইয়ের পাঠ উন্মোচন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মেরিনা খাতুন বলেন, লালন সাধকের জীবন নিয়ে লেখা আব্দুল্লাহ আল আমিন বইটি মানুষ ও মানবিকতার কথা বলে গেছেন। তার লেখাতে সমাজের বৈশম্য ভেদ করে সমাজ ব্যবস্থাকে নতুন আলোর পথ দেখিয়েছেন।

সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, সকল ধর্মের বাইরে মানবিকতাকে প্রকাশ করেছে। তার গান, ভাবগম্ভিরর্যপুর্ণ আবেগঘন করেছে বাঙ্গালি সমাজ ব্যবস্থাকে। নতুন আলোর পথ দেখিয়েছেন। ধর্ম বর্ণ ভেদ করে মানবতাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানিয়েছেন। ততকালিন সমাজ ব্যবস্থাকে ধর্ম্ন তত্তকে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতো। সে সমাজে লালন সমাজ ব্যবস্থাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে জাত কারে কয় সংসারে।

সামিমা ফেরদফেরদৌস বলেন, লালন সাধক ছিলেন মানবধর্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গান রচনা করেছেন। লালন এক নিঃসঙ্গ সাধক বইটিতে লালন সাধক সমাজের জন্য কত যে গুরুত্তপূর্ণ ভুমিকা রেখেছেন তা কালের বির্বতন।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সানজিদা ফেরদৌস বলেন, লালন সাধকের বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেক বিষয় সামনে চলে আসবে। প্রায় ২ হাজার গান তিনি রচনা করে গেছেন। মানুষের মুখে মুখে যা আজ ও গাইতে শোনা যায়।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খেজমত আলী মালিথা বলেন, বই পড়ার প্রবনতা বৃদ্ধি করতে হবে। লালন সাধকের কথা বলতে গেলে সহজিয়া মত। এই মত মানুষের কথা বলে, আলোর পথের কথা বলে, লালন দর্শনকে তুলে ধরতে হবে। তবে সমাজে মামুষ মানিষকে ভালোবাসতে শেখায়।

লেখক বন্ধুসভার সভাপতি ও সরকারি কলেজের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন বলেন, বই লেখার প্রেরণা আমি বাবা, দাদার কাছ থেকে পেয়েছি। তারা চাইতেন যেন আমি লেখক হয়। আর লালন ফকিরের বিষয়ে খুব ছোট বেলা থেকে লালন সঙ্গিত আমাকে কাছে টানতো। একজন অশিক্ষিত মানুষ কিভাবে এতো ভাবগাম্ভীর্যের গান লিখতে পারে। বিষয়টি আমাকে আন্দোলিত করে। লালন বিষয়ে পড়ার আবেগ তৈরি হয়েছে।

সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এ এইস এম রশিদুল ইসলাম, আরো উপস্থিত ছিলেন, বন্ধুসভার লিখন, জুই, নাফিয়া, নাফিউল, রাফি, রিয়াজুল, মেরিনা, তাসনিম।

পাঠচক্র শেষে লালন সাধকের মরমি গান সর্ব সাধন সিদ্ধ হয় যার মানুষ গুরু নিষ্টা যার এমন আরো কয়েকটি গান পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সদস্য অর্পণ।

আপনার মতামত লিখুন :