মেহেরপুরে তামাক চাষীদের মানববন্ধন
মেহেরপুর প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে শতভাগ মালিকানাধীন তামাক কোম্পানির জন্য আলাদা নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেছে মেহেরপুরের ক্ষতিগ্রস্থ তামাক চাষীরা। দেশীয় মালিকানাধীন সিগারেট কোম্পানি বন্ধের কারণে উৎপাদিত তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা ও সুরক্ষার দাবিতে মেহেরপুরের প্রেস ক্লাবের সামনে পোস্টার, ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন মেহেরপুরের ক্ষতিগ্রস্থ তামাক চাষীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্যে সাধারণ চাষী সেন্টু মিয়া, রফিকুল ইসলাম, উজ্জল হোসেন, মান্নান হোসেন এবং রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভাইয়েরা আমার, আপনারা জানেন আজকে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি একটি বিশেষ কারনে এবং এই বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আমরা গরিব চাষী আজকে চাষ থেকে আমরা দূরে আছি, আমরা তামাক চাষ করতে পারি। কেননা আমাদের তামাক চাষ করার পরে সেটা বিক্রি করা যায় না। দেশে বর্তমানে শুধুমাত্র দুটি বিদেশি কোম্পানি এবং কয়েকটি দেশীয় কোম্পানি তামাক ক্রয় করে। কিন্তু আজ থেকে ১০ বছর আগেও আমরা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানির কাছে ন্যায্য মুল্যে তামাক বিক্রি করতাম । এসকল শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানি নিম্নমানের সিগারেট বানাত এবং আমরা তাদের জন্য তামাক উৎপাদন করে দিতাম। বিদেশী সিগারেট কোম্পানী শুধুমাত্র উচ্চমানের সিগারেট বানাত, তাই আমাদের তামাক পাতা দেশীয় কোম্পানির কাছে বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন এই বিদেশী কোম্পানী বিশেষত বিএটি নিম্নমানের সিগারেট উৎপাদন করে পুরো বাজার দখল করে নিয়েছে তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো পেরে উঠছেনা। আস্তে আস্তে বাজার হারাতে হারাতে দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো নিঃস্ব হয়ে গেছে। বর্তমানে ৩০ টি শতভাগ মালিকানাধীন কোম্পানির মধ্যে অধিকাংশ কারখানাগুলা কোন মতো চলছে কিংবা বন্ধ আছে, উৎপাদন করতে পারে না। তারা আমাদের কাছ থেকে তামাক নেয়না। আমরা আপনার কাছে দাবী রাখতে চাই ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বাজেটে আপনি এবং মাননীয় অর্থমন্ত্রী ওয়াদা করেছিলেন এবং সংসদে বিল পাস করেছিলেন যে শতভাগ মালিকানাধীন কোম্পানির জন্য আলাদা নীতিমালা তৈরি করে যাতে তারা উৎপাদনে ফিরে আসতে পারে এবং ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার নিকট সবিনয় আরজি, এই দেশে কি শুধু একটিমাত্র বিদেশি কোম্পানি থাকবে নাকি ৩০টি দেশীয় মালিকানাধীন কোম্পানি? দেশিয় কোম্পানিগুলো যদি আজ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে দেশের বেকারত্ব দূর হবে এবং আমরা ভবিষ্যতে সবসময় প্রতিবছর তাদের কাছে পণ্য বিক্রয়ের আশা করতে পারি এবং আমরা উৎপাদন করে লাভবান হতে পারি।
পরিশেষে তারা আরো বলেন- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সুযোগ দিন, আমরা কাজ করে দুটো ভাত খেতে চাই, আমরা উৎপাদন করতে চাই। আমাদের দেশের মাটি উর্বর, আমরা কৃষিকাজে ফিরে যেতে চাই। আমাদের কৃষি কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আকুল অনুরোধ করবো আপনি শতভাগ মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে বাঁচানোর জন্য যে নীতিমালা দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করুন।