মেহেরপুরে পাবলিক প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে মামলা, সহযোগী আসামি ১৮১
অস্ত্রবাজ ও সন্ত্রাসী বাহিনী গঠণ করে নীরিহ মানুষদের মামলা, খুন ও গুমের ভয় দেখিয়ে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পল্লব ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে হাজির হয়ে কামাল হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় পিপির সহযোগী হিসেবে ১৮১ জনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনার আবেদন করেছেন বাদি।
মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন এসকল তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক শারমিন নাহার সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা ১৮১ সহযোগী আসামির মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবুল বিশ্বাস, বুড়িপোতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহ জামান চৌধুরী, বারাদি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী মাস্টার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রুপক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান হিরণ, ছাত্রলীগ নেতা কুতুব উদ্দিন।
মামলার এজাহারে বাদি বলেন, মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পিপি পল্লব ভট্টাচার্য প্রভাব খাটিয়ে সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদ দখলে নিয়ে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজ বাহিনী তৈরি করে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করেন এবং নিরীহ লোকদের মামলা, খুন ও গুম এর ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিগত ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫৯টি মামলার আসামিদের কাছে থেকে সহযোগী আসামিদের দিয়ে নিরীহ লোকদের তাহার বাড়ীতে বা তাহার চেম্বারে ডেকে নিয়ে এসে টাকা আদায় করেছেন। যেসব লোকজন আসামীকে টাকা দিতে ব্যর্থ হইয়াছে তাহাদের উপরে উল্লেখিত মামলায় আসামী করিয়াছে এবং উল্লেখিত মামলায় আসামীর সংখ্যা অনুমান দেড় থেকে দুই হাজার হইবে এই আসামীদের সহিত জামিনের মুক্তি বা চার্জ হইতে খালাস বা খালাস প্রদানের নামে আসামীকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও সাজা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিন কোটি টাকা আদায় করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাদী তাহার দলীয় সংগঠনের পক্ষ হইতে মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করিবার দায়িত্ব থাকায় আসামী তাহাকে তাহার নিজস্ব বাড়ীর ‘ল’ চেম্বারে ডেকে নেন। এবং সাক্ষীগণদের উপস্থিতিতে ১১ জন আসামীর জামিনের জন্য ৪ লাখ টাকা চাঁদা গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, পল্লব ভট্টাচার্য ২০১৪ সাল থেকে মেহেরপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি দুই মাসের ছুটিতে জাপানে অবস্থান করছেন।