মা টাকা আমি দিচ্ছি,আপনি বাসায় ফিরে যান
থরথর শরীরে নিয়ে চার মাইল হেঁটে কলা বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার অসহায় বৃদ্ধা রেনু আক্তার।
যদিও গ্রামের চার মাইল সড়ক পাড়ি দেবার ওই সময়ের মধ্যে তিনি কলাগুলোর একটিও বিক্রি করতে পারেননি। কলা বিক্রির আশায় শেষ পর্যন্ত যাচ্ছিলেন বারহাট্টা গোপালপুর বাজার।
কিন্তু পথিমধ্যেই চেকপোস্টে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. মিজানুর রহমান’র প্রশ্নের মুখোমুখি বৃদ্ধা রেনু। ওসিকে জানালেন তিনি নিজের দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের কথা।
প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের বাসিন্দা রেনু জানালেন, লকডাউন আর করোনার জন্য ঘর থেকে বের হতে না পেরে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় পেট চালাতে পারছেন না তিনি। ঘরে খাবারদাবার নেই। শেষ পর্যন্ত উপায়ন্তর না পেয়ে বুদ্ধি খাটিয়ে বাড়ির গাছ থেকে কলা পেরে বিক্রি করে বাজার করতে চাচ্ছিলেন।
সংসারজীবনের দারিদ্র্যতার করাল গ্রাস অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তিনি বললেন, এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে তারা নিজেরাই চলতে পারে না অভুক্ত থাকে। ওদের জীবনই তো দুর্বিষহ… ওরা নিজেরা চলতে পারতো আর তখন যদি আমার ভরণপোষণ না করতো তবে মনে কষ্ট থাকতো। কিন্তু এখন তা নেই।
এদিকে সবকিছু শুনে অফিসার ইন-চার্জ অসহায় বৃদ্ধা রেনুকে বললেন, মা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা মধ্যে আপনার বাইরে থাকা বা কলা বিক্রির দরকার নেই। আমি টাকা দিচ্ছি, কি দরকার তা কিনে আপনি ঘরে চলে যান।
অফিসার ইন-চার্জ মো. মিজানুর রহমান’র কথা শুনে তার দেয়া টাকা হাতে পেয়ে বেজায় খুশি হলেন রেনু। তিনি প্রশ্ন করলেন, সব পুলিশ অফিসারই কি এমন?