১৯ দিনের এতিম শিশুর বাড়িতে ঈদ উপহার নিয়ে গেলেন ইউএনও

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:02 PM, 06 April 2024

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে গত (১৮ মার্চ) রোববার সকালে উপজেলার দেবীপুর গ্রামের সেলিম রেজা ও পান্না খাতুন দম্পতির কোল জুড়ে আসে একটি কন্যা সন্তান। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পরিবারের সবাই ছিল আনন্দে আত্মহারা। কিন্তু সেই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সকালে সিজার করে সন্তান হওয়ার পর সন্ধ্যায় মারা যায় মা পান্না খাতুন। রেখে যায় কন্যা সন্তান জান্নাতুলকে। মুহূর্তে আনন্দ বেদনায় পরিণত হয়। পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া।

মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন পান্না খাতুনের স্বামী সেলিম রেজা সহ পরিবারের লোকজন। একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর গাংনীর সেই হাসিনা প্রাইভেট হাসপাতাল মালিকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন।

শনিবার (৬ এপ্রিল) মা হারা ১৯ দিনের নবজাতক জান্নাত ও তার পরিবারের জন্য ঈদ উপহার নিয়ে যায় গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা। খাদ্য সামগ্রী ও সমস্ত চিকিৎসার খরচ দেওয়ার আশ্বাসও দেন এই ইউএনও।

পান্না খাতুনের স্বামী সেলিম রেজা বলেন, আমার মা মরা শিশু জান্নাতকে নিয়ে যে কি কষ্টে আছি তা বলে বোঝানো সম্ভব না। জান্নাতের দিকে তাকালেই আমার চোখে অঝরে বৃষ্টি ঝরে। মা ছাড়া সন্তান লালন পালন করার বেদনার যে কি কষ্ট তা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছি। এখন শিশু জান্নাতকে কোটার দুধ কিনে খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে কোনভাবেই ভুলতে পারছিনা। আমার সাত বছরের আর একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। আপনারা সবাই আমার দুই এতিম সন্তানের জন্য দোয়া করবেন আমি যেন তাদেরকে সঠিকভাবে লালন পালন করতে পারি।

বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল বলেন, আমি যতটুকু পেরেছি তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছি। আর যখনই তার কোন সমস্যা হবে আমাকে জানালে আমি সার্বিক সহযোগিতা করবো।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা বলেন, শিশু জান্নাতের দিকে তাকালে বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। মা ছাড়া সন্তান বড় করা যে কি কষ্ট তা বলে বোঝানো অসম্ভব। হাজার চেষ্টা করলেও তার মাকে ফিরিয়ে দিতে আমরা পারবনা কিন্তু তার দেখাশোনার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো

সাংবাদিক রাব্বি আহমেদ প্রচণ্ড তাপদাহ আর গরমে শিশু জান্নাতের কষ্টের কথা জানিয়ে তার জন্য একটি সোলার প্যানেল ব্যবস্থা করার কথা বললে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

এসময় গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. মারুফ, বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন :