শহীদ মিনার নেই মেহেরপুরের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:07 AM, 16 February 2023

একুশে ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর। মেহেরপুরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া হয়ে থাকে। শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে দিবসটি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী থেকে জাতিসংঘের দেশগুলোতে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ২৩ বছর অতিবাহিত হলেও বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানতো ভিন্ন কথা সরকারী অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও র্নিমিত হয়নি শহীদ মিনার। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন অনেক কিছুই হয় কিন্তু ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য জীবন উৎস্বর্গ করা ছাত্রদের সম্মানে শহীদ মিনার তৈরিতে এখনও নেই উদ্যোগ। প্রতিটি আন্দোলনেই অগ্রনী ভুমিকা পালন করে ছাত্র সমাজ। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের এই দিনে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখনও খুজতে হয় শহীদ মিনার। জেলা উপজেলা শহরে যে শহীদ মিনার রয়েছে জাতীয় দিসব ছাড়া সেগুলোও থাকে অবহেলিত। আগামীতে সকল প্রতিষ্ঠানেই যেনো শহীদ মিনার নির্মান করা হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা শহরের শহীদ ডা: সামসুজ্জোহা পার্কে অবস্থিত মেহেরপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও মুজিবনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্যদিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। অধিকাংশ গ্রামা লের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও প্রভাতফেরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এক সময় গাংনী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশেই শহীদ মিনার ছিলো বেশ কয়েক বছর আগে সৌন্র্দয বর্ধনের অজুহাতে ভেঙ্গে ফেলা হলেও তা পুনরায় নিমার্ণ হয়নি। গাংনী সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও নেই শহীদ মিনার, মুজিবনগর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের এক কোনায় ছোট্ট একটা শহীদ মিনার থাকলেও তার কোন গুরুত্ব নেই। সারা বছরই ঝোপঝাড়ের আড়ালে পড়ে থাকে যা চোখেই পড়ে না। শুধুই ২০ ফেব্রুয়ারী ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে ২১ তারিখে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়। রবিবার(২০ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ৮ টার সময়ও মুজিবনগর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।
জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যানুযায়ী জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মোট ৫০৩ টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪৮ টি এর মধ্যে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪টি, সরকারী ও বেসরকারী কলেজ ১৫ টি, মাদ্রাসা ২৫ টি কলেজিয়েট স্কুল ৭টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০৮টি। এসকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫ টিতে শহীদ মিনার আছে। বাকিগুলোতে শহীদ মিনার নিমার্ণ হয়নি আজও। গাংনী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, এক সময় শহীদ মিনার ছিলো তা ভেঙ্গে ফেলার পর আর নির্মাণ করা হয়নি। আশা করছি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারীর আগেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
মুজিবনগর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ঝোপের আড়ালে থাকে বিষয়টি স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক ইজারুল ইসলাম জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ছোট একটা শহীদ মিনার আছে। প্রতি বছরই ২০ তারিখে পরিষ্কার করা হয় এবং ২১ ফেব্রুয়ারী ফুল দেওয়া হয়। আমরা চেষ্টা করছি এবং সরকারী ভাবে তৈরির জন্য আবেদন জানিয়েছি।
জেলা শিক্ষা অফিসার মাহাফুজুল হোসেন বলেন, সরকারী উদ্যোগে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো উচিৎ। মেহেরপুরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোর মধ্যে ৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। চেষ্টা করছি আগামীতে ভাষা আন্দোলনের শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যেনো নিজেদের প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন :