মেহেরপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে গাড়ি বেচা-কেনার হাট

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:54 PM, 06 December 2020

বিদ্যালয়ের মাঠে গাড়ি বেচা-কেনার হাট
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গাড়ি বেচা-কেনার হাট বসিয়েছেন মেহেরপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল
মেহেরপুরে বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে গাড়ি বেচার হাট বসিয়েছেন মেহেরপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল।

এ হাটের জন্য কয়েকদিন ধরে মাইকিং করে, হ্যান্ডবিল বিলিসহ বিদ্যালয়ের সামনে বড় বড় ব্যানার টাঙিয়ে প্রচার চালান তিনি। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা কিছুই জানেন না। এদিকে হাটের পরিচালক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল বলছেন, তারা কর্তৃপক্ষের মৌনসম্মতি পেয়েছেন।

গ্রামবাসী জানায়, মেহেরপুর সদর থানার আমদহ গ্রামে বামনপাড়া মোড়ে বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে মেহেরপুর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন জুয়েল ও তার লোকজন গত শুক্রবার পুরাতন মোটরসাইকেল, নসিমন, করিমন কেনা-বেচার হাট বসিয়েছেন। এর জন্য কয়েকদিন ধরে মাইকিং, হ্যান্ডবিল বিলি ও ব্যানার টাঙিয়ে প্রচারও করেছেন।

গত শুক্রবার জাকজমক আয়োজনের মাধ্যমে হাটের উদ্বোধন করে ঘোষণা দেওয়া হয় প্রতি শুক্রবার স্কুলমাঠে হাট বসবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফৌজিয়া আফরোজ তুলি বলেন, হাট পরিচালনাকারীরা আমার কাছে এসেছিলেন।

তারা বারবার করে আমাকে বলেছেন, হাট বসানোর জন্য রেজুলেশন করতে, আমাকে কিছু টাকাও দেবে বলেন। আমি বলেছি হবে না। আমার স্কুল নোংরা করে আপনারা ব্যবসা করবেন, তা হবে না।

তাতে আমাকে বললো, প্রতি শুক্রবার হাট বসবে।
আমি বলেছি, শনিবারে স্কুল খুলবে। তখনতো ভীষণ ঝামেলা হবে। স্কুলমাঠে কোনোভাবে হাট করার সুযোগ নেই। আমার স্কুলমাঠ কেন হাট হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, এ হাটের সাথে স্কুলেল সভাপতি দরুদ আলীও জড়িত আছেন।

তিনিও আমাকে হাটের জন্য ফোন দিয়েছেন। আমি তাকেও না করে দিয়েছি। আমি এই বিষয়টি ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি।

বিদ্যালয়ের সভাপতি দরুদ আলী বলেন, হাট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা স্ট্যাম্পে লিখিত নিয়েছি, বিদ্যালয়ের কোনো ক্ষতি হলে তা তারা পূরণ করে দেবে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো আয় নেই। এ থেকে বিদ্যালয়ের কিছু আয় হবে।

তিনি আরও বলেন, এলাকার লোকের দাবি ও আবদার পূরণ করতে এটা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আপিল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হাট বাসানোর কোনো সুযোগ নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম বলেন, তারা আমার কাছে এসেছিলেন। হাটের বিষয়ে কথা বলেছেন। আমি তাদের জানিয়ে দিয়েছি, আমাদের নির্ধারিত হাট আছে। সেটা আমরা নিয়ম মেনে ইজারা দিই। এর বাইরে আমাদের হাটের অনুমোদন দেবার কোনো সুযোগ নেই।

তবে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও হাটের পরিচালক কামাল হোসেন জুয়েল বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য হাট বসানো হচ্ছে। এতে কিছু লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ বিষয়ে আমরা উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তাসহ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি। সকলেই মৌনসম্মতি দিয়েছ।

আপনার মতামত লিখুন :