মেহেরপুরের গাংনী বিএডিসি অফিসের দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারি, স্বজনপ্রীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে চিঠি

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:22 PM, 04 May 2021

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা বিএডিসি অফিসের দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারির, স্বজনপ্রীতি ও অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বরাবর চিঠি প্রেরণ করছেন গাংনী উপজেলা বিএডিসি এর অন্তর্গত গ্রুপ ম্যানেজার বৃন্দ ও ব্যক্তি ক্ষুদ্র সেচ মালিকবৃন্দ। গত ৩রা মে সোমবার ডাকযোগে এ চিঠি প্রেরণ করা হয়। এছাড়া কৃষি মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ঢাকা প্রধান প্রকৌশলী, সচিব কৃষি মন্ত্রণালয়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিএডিসি যশোর, জেলা প্রশাসক মেহেরপুর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাংনী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গাংনী, পৌর মেয়র গাংনী পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওই চিঠির অনুলিপি প্রেরণ করেন তারা।

ওই পত্রে তারা উল্লেখ করেন, গাংনী উপজেলা বিএডিসি অফিস এখন দূর্নীতি-অনিয়ম, অবৈধ অর্থ লেনদেনের মহাকারখানার এক নাম। অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সমন্বয়ে মুজিবনগর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ২০১২-১৩ অর্থ বছরের শুরুর পর থেকে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে চলে আসছে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি। সরকার কর্তৃক গভীর নলকূপ কৃষি উন্নয়নের জন্য দেওয়া হলেও অর্থ লেনদেনের কারণে যথাযথ স্থানে বসানো হয় নাই। যে কারণে সরকার তার কাঙ্খিত ভাড়া পায় না। এছাড়া কিছু গভীর নলকূপ অদ্যবধি অকেজো হয়ে পড়েছে কিন্তু নলকূপ মেরামতের বিষয়ে কোনো নজর নেই তাদের। একজন সাধারণ কৃষককে গাংনী, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া পর্যন্ত হয়রানির শিকার হতে হয়। ব্যক্তিমালিকানায় ক্ষুদ্রসেচ লাইসেন্স বাবদ ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সেচ কমিটি থেকে পাশ করানো হয়। সেচ নীতিমালা বহির্ভূত ভাবে এক স্কীমের মধ্যে অন্য স্কীমের লাইসেন্স দিয়ে মটর পাম্প স্থাপন করে। এভাবে অবৈধ অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কৃষকরা প্রতিনিয়ত প্রতারিত করা হয়।

ওই পত্রে আরো উল্লেখ করা হয় যে, গভীর নলকূপের অপারেটর বিল বাবদ ম্যানেজারকে সরকারি নীতিমালায় ১০% দেওয়ার কথা থাকলেও গত ২০ মাসে তা দেওয়া হয়নি। আবার ৫০% ভাগ দিলে করে দেবে বলে জানায় কর্মকর্তারা।
বিএডিসি কর্তৃক গভীর নলকূপ ও এলএলপির অবকাঠামো মেরামত, মটর পাম্প, বারিক পাইপ, রাইজার, মিটার ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোন প্রকার সহযোগিতা করা হয় না এমনকি ইলেকট্রিক প্রিপেইড মিটার, মটর পাইপের কেবি সার্ভিসিং বা মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ থাকলেও তা দেওয়া হয় না কিন্তু খরচ দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সেচ নীতিমালা লংঘন করে দূরত্ব স্বীমানা না মেনে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে এক স্কীমের মধ্যে অন্য স্কীম পাশ করা হয়।
করোনা কালীন কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত সেচ ব্যবস্থাপনায় বৈদ্যুতিক বিলের ৫০% চার্জ মওকুফ করলেও কৃষকদের প্রদান না করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে লক্ষ লক্ষ টাকার অর্থ-বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করা হয় ওই পত্রে।
গাংনী উপজেলা বিএডিসি অফিসের বিভিন্ন অনিয়ম, অর্থ কেলেঙ্কারি স্বজনপ্রীতির এই অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান গাংনী উপজেলার গভীর নলকূপ, এলএলপি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বিএডিসির অন্তর্গত গ্রুপ ম্যানেজার বৃন্দ ও ব্যক্তি ক্ষুদ্রসেচ মালিকবৃন্দ।

গাংনী বিএডিসি উপসহকারী প্রোকৌশলী শ্যামল হোসেন জানান, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। আমার সময়ে কোন অনিয়ম, দুর্নীতি বা অর্থ কেলেঙ্কারীর মত কোন ঘটনা ঘটেনি। আমার যোগদানের পুর্বে কোন সমস্যা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই বা সেই দ্বায়ভারও আমার নয়।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, এ ব্যাপারে আমি এখন পর্যন্ত কোন চিঠি পাইনি।

আপনার মতামত লিখুন :