ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আতঙ্কের নাম কুকুর

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:36 PM, 24 August 2020

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আতঙ্কের নাম কুকুর! কুকুরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে ক্রমেই কুকুরের সংখ্যা বেড়ে চলছে।

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের চেতনতা আর দায়িত্বশীলতা জরুরি।ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা প্রার্থী রোগীরা চরম অবহেলার সম্মুখীন হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতা পরিস্থিতিকে ক্রমশই নাজুক করে তুলছে।

ডাক্তার আর ঔষধ সংকট নিয়ে রোগীদের ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি করোনা জুজু’র অজুহাতে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা জনিত অনুপস্থিতির বিষয়টি অজ্ঞাত কারনে উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। এ্যাজমা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারনে ভেড়ামারা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর করোনাযোদ্ধা মেহেদী হাসান সবুজ’র বাবা ইব্রাহিম হোসেনকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

যেনতেনভাবে তার চিকিৎসা হওয়ায় রোববার রাতে ইব্রাহিম হোসেনের মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হলেও দায়িত্বরতদের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিলো না। রোগীর পরিবারের সদস্যরা রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার বারংবার অনুরোধের একপর্যায়ে ব্যবহৃত ও জরাজীর্ণ একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার সিলিন্ডার রোগীর বেডে এনে জানানো হয়, অক্সিজেন শেষ হয়ে গেছে, হাসপাতালে আর সিলিন্ডার নেই। দায়িত্বরতরা রোগীকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়ার জন্য উপদেশ খয়রাত করতে থাকে।

এমতাবস্থায় কাউন্সিলর মেহেদী হাসান সবুজ রোগীর জন্য নতুন অক্সিজেন সিলিন্ডার না দিলে এবং রোগীর জীবনহানির ঘটনা ঘটলে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে বলে জানালে তাৎক্ষণিকভাবেই স্টোররুম থেকে নতুন সিলিন্ডার এনে রোগীকে দেওয়া হয়। এটাই যদি ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবার নমুনা হয়, তাহলে এর জবাবদিহিতা ও প্রতিকার কার কাছ থেকে পাওয়া যাবে, প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীদের।

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবে রোগী ও তার পরিবারের লোকজন রীতিমতো আতঙ্ক নিয়ে চলাফেরা করে। কুকুরের কামড়ে রোগির পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বেড়ে গেছে।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ইতিপূর্বে ভেড়ামারা পৌরসভার অধীনে কুকুর নিধন অব্যাহত ছিলো। ‘অভয়ারণ্য’ নামে এক এনজিও কুকুর মারাকে প্রাণী হত্যা ও পরিবেশ বিরোধী বলে প্রচারণা শুরু করে। এরপর কুকুর নিধনের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করার পর কুকুর নিধনের উপর উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে। উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কুকুর নিধন বন্ধে নির্দেশ দেয়।

সালাউদ্দিন বলেন, হাসপাতালে কুকুর। ঘেউ-ঘেউ করে তেড়ে আসে। আর রাত হলেতো কথাই নেই। রাতে বেলায় কুকুর গুলো হাসপাতালে ১ম ও ২য় তলায় ঘুরাঘুরি করে। কামড় খাওয়ার ভয়ে কিচু বলিনী। কুকুর নিয়ে সবাই আতঙ্ক আর ভোগান্তিতে আছে।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল আমিন জানান, কুকুর নিধন এর ব্যাপারে বাহিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওশনারা সিদ্দিক কে অবগত করা হয়েছে। তারা ব্যাবস্থা নেবে বলেন জানান। হাসপাতালের কোন ডাক্তার, নার্স ও ষ্টাফ রোগিদের সেবা না দিলে বা খারাপ আচারন করলে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব শামিমুল ইসলাম ছানা বলেন, আসলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন সম্ভব হচ্ছে না। কুকুরের উপদ্রব যে হারে বাড়ছে তাতে সমাজের ও পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে। ইতিপূর্বে কুকুর নিধন অব্যাহত ছিলো। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে ক্রমেই কুকুরের সংখ্যা বেড়ে চলছে।

আপনার মতামত লিখুন :