নিশিন্দা গাছের উপকারিতা

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  12:41 PM, 31 July 2021

বাংলা নাম- নিশিন্দা(বৈজ্ঞানিক নাম :vitex negudo) এর ইংরেজি নাম chinese chinese chaste tree বা flve- leaved chaste tree, horsshoe vitex,nisinda এক প্রকার ছোট পর্নমোচী(প্রতি বছর পাতা ঝরে যায় )উদ্ভিদ।এটি গুল্ম এবং বৃক্ষের সংকর বলা যায়।
নিশিন্দাকে ছোট আকারের পত্রঝরা বৃক্ষ অথবা বড় আকারের গুল্মও বলা যায়। এর গড় উচ্চতা ৪ থেকে ৫ মিটার হয়।

আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গাতেই নিশিন্দা চোখে পড়ে। গাছ খুবই কষ্টসহিষ্ণু এবং প্রতিকূলতার মাঝেও টিকে থাকতে পারে। রাস্তার ধার, জমির আইল, বাঁধের ধার, পতিত জমি, বন-জঙ্গল ও পাহাড়ের ঢালে নিশিন্দা গাছ জন্মাতে দেখা যায়। তবে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় নিশিন্দা গাছ বেশি দেখা যায়। গাছের কাঠ ও শাখা-প্রশাখা বেশ শক্ত। বৃদ্ধি ধীর গতিসম্পন্ন। গাছের কাঠের রং ধূসর থেকে সাদা। এর কাঠ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজ ও গ্রামাঞ্চলে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। ছাই থেকে রং তৈরি করা হয়। গাছের শাখা-প্রশাখা অধিক। যৌগিক পাতা লম্বায় ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার। গঠন অসমান ও বর্শাকৃতির, অগ্রভাগ সূঁচালো এবং ৩ থেকে ৫ ফলক বিশিষ্ট। রং গাঢ় সবুজ। পাতা কচলালে উগ্র গন্ধ বের হয়।

নিশিন্দার ফুল ফোটার মৌসুম বর্ষা ও শরৎকাল। এ সময়ে গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে লম্বা ঊর্ধ্বমুখী মঞ্জরিতে থোকায় থোকায় ছোট নীলাভ থেকে বেগুনি রঙের ফুল ফোটে। ফুল মঞ্জরির নিচ থেকে ফোটা শুরু হয়ে আস্তে আস্তে উপরেরগুলো ফোটে। ফুটন্ত ফুলের সৌন্দর্য নজরকাড়া। ফুল গন্ধহীন। ফুল শেষে গাছে ফল হয়। ফল আকারে ছোট ও ডিম্বাকৃতির। বীজ থেকে নিশিন্দার বংশবিস্তার করা যায়। তবে ডাল কাটিং পদ্ধতির মাধ্যমে বংশবিস্তার সহজ ও প্রচলিত। বর্তমানে নিশিন্দা চাষের প্রচলন তেমন না থাকলেও হেজ (Hedge) উদ্ভিদ হিসেবে বহুল ব্যবহার রয়েছে। নিশিন্দার পাতা, ফুল, ফল, বীজ, মূল সবই ভেষজ গুণে গুণান্বিত। গরম পানিতে পাতার নির্যাস ক্রনিক ব্যথা, জ্বর, বাত জ্বর, বাতব্যথা, মাথাব্যথা উপশম করে। এছাড়া সব ধরনের চর্মরোগ, সর্দি, হাঁপানি, ঠাণ্ডাজনিত রোগে নিশিন্দা বেশ কার্যকর। কোথাও কোথাও নিশিন্দা পাতা সেদ্ধ করে ওই পানি দিয়ে শিশুদের গোসল করাতে দেখা যায়। এছাড়া নিশিন্দা গাছের শাখা-প্রশাখা ও পাতা পোকা-মাকড় দমন করে। বহুকাল ধরে কৃষিতে রয়েছে এর জৈব ব্যবহার। নিশিন্দা গাছের পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে বীজের সঙ্গে মিশিয়ে বীজ সংরক্ষণ করলে তাতে পোকার আক্রমণ হয় না। পাতার রস থেকে তৈরি করা জৈব কীটনাশক ব্যবহার পরিবেশসম্মত ও অর্থ সাশ্রয়ী চাষাবাদে ভূমিকা রাখে।

উপকারিতাঃ
১) এইগাছের পাতা শিকড়, ফুল এবং ফল সবকিছু কাজে লাগে।
২)গরম পানিতে পাতার তার নির্যাস ক্রমিক ব্যথা দূর করে।
৩) বাত,মাথাব্যথা উপশম হয়।
৪) এটা হাপানি,ঠান্ডা জনিত রোগে ও বিশেষ কার্যকারী
৫) গাছের ডাল পালা পেকো শাকড় রোধী।
৬) হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

আপনার মতামত লিখুন :