নিখোঁজের ২৫ দিন পর কবরস্থানে মিলল স্কুলছাত্রের লাশ

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  05:47 PM, 14 February 2022

চুয়াডাঙ্গায় নিখোঁজের ২৫ দিন পর স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে অভিযান চালিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গোরস্থানের একটি কবর থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

আবু হুরায়ারা চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের ভুট্টা ব্যবসায়ী ও কৃষক আব্দুল বারেকের ছেলে এবং চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় আব্দুল মোমিন নামের একজনসহ মোট দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃত মোমিন তালতলার শহিদুল ইসলামের ছেলে ও আবু হুরায়রা প্রতিবেশী। পুলিশ ধারণা করছে, তাকে হত্যা করে গোরস্থানের একটি কবরে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।

পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা নিখোঁজের ঘটনায় রোববার সন্ধ্যায় তার প্রতিবেশী আব্দুল মোমিনসহ দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সুখেন্দু বসুর নেতৃত্বে রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মেফাউল ইসলাম ফোর্স নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গোরস্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় গোরস্তানের একটি কবর থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, অপারেশন) সুখেন্দু বসু জানান, রোববার দিবাগত রাতে পৌর এলাকার তালতলা গোরস্থানের একটি কবর থেকে আবু হুরায়রার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, গত ১৯ জানুয়ারি স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি ওই শিশুর পিতা আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় ওই শিশুর প্রতিবেশী আব্দুল মোমিনসহ দুজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রোববার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে তালতলা গোরস্থানের একটি কবর থেকে স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আবু হুরায়রা পাশের বাড়ির রঞ্জু হক নামের এক প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়তে যায়। ওই শিক্ষকের ঘরে বই-ব্যাগ রেখে সে বাইরে বের হয়। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই দিন সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়। রাতে পুলিশকে খবর দেয় তারা। এলাকায় মাইকিংও করা হয়। পরে ধারণা করা হয়, বাড়ির পাশে পুকুরে পড়েছে, সে জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা এসে পুকুরে দীর্ঘসময় ধরে তল্লাশি করেন। তবু সন্ধান মেলেনি তার। এরপর এলাকায় গুঞ্জন ওঠে তাকে জিনে তুলে নিয়ে গেছে। এ ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর ২৫ জানুয়ারি আবু হুরায়রার পিতা আব্দুল বারেক চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি অপহরণ মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ তার প্রাইভেট শিক্ষক রঞ্জু ও তার ভাই মঞ্জুকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়।

 

আপনার মতামত লিখুন :