গাংনীর আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে নিবেদিত প্রাণ আহম্মেদ আলী

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:12 PM, 13 March 2022

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও গাংনী পৌরসভার তৃতীয় বারের মেয়র আহম্মেদ আলীর জীবন-যাপন দেখলে বোঝার উপায় নেই যে তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ আসনে ছিলেন। রাজনীতিতে নির্লোভ নেতা আহম্মেদ আলী চাইলে রাজনীতিকে পুঁজি করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও গাড়ি-বাড়ির মালিক হতে পারতেন। হতে পারতেন কোন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। থাকতে পারতেন বড় নেতৃত্বে। কিন্তু না! প্রভাব-প্রতিপত্তিতে তাকে ছুঁতে পারেনি।

রাজনীতি আর বঙ্গবন্ধু ছাড়া কিছুই বুঝতে চান না তিনি। অবশ্য রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এখন সব রকম প্রতিপত্তি গড়ে উঠে। এটাই আজকের দিনের স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এই রাজনৈতিক নেতার বেলায় চিত্রটা একে বারেই ভিন্ন।

মেহেরপুর সরকারি কলেজে ১৯৭৫ সালের পর ছাত্রলীগ নামের কোন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ছিল না। সেই সময় আহম্মেদ আলীই সর্ব প্রথম মেহেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক হয়ে ১৯৮৩-৮৪ সালে ছাত্রলীগ সংগঠন গড়ে তোলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রায়হান ও পাশার সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বহুবার কারাবরণ করেছেন ।

১৯৯১-১৯৯৬ সালে এবং ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বিএনপি ও জামাতের নেতাকর্মী দিবালোকে আহম্মেদ আলীকে হামলা করে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম করেন। ওই সময় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা এ নেতা কখনও পিছনা হননি। বিএনপি-জামায়াতের এ হামলা ও মামলাকে উপেক্ষা করে অদ্যাবদি গাংনীর আওয়ামী লীগ রাজনীতিকে বুক দিয়ে আগলিয়ে রেখেছেন। আওয়ামী লীগ রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য তাকে ২০০১ সালের জননিরাপত্তা আইনে প্রধান আসামী করা হয়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় ৪০টি মামলায় জড়িত করে হয়রানি করা হয় তাকে।

২০০৪ সালে আন্দোলনরত অবস্থায় গাংনী পৌরসভার নির্বাচনে আহম্মেদ আলী আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচন করার কারণে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের নেতাকর্মীরা প্রধান টার্গেট করেন আহম্মেদ আলীকে। আহম্মেদ আলীকে পুলিশ আটক করে। জেলখানায় থেকেও আহম্মেদ আলী গাংনী পৌরসভার নির্বাচনে ২০০৪ সালে জনগণের ভালোবাসায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসাবে বিজয় লাভ করেন। ২০০৭ সালে নানা ভাবে আহম্মেদ আলীকে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে কোরাইশী দলে যোগদানের জন্য আহ্বান করা হয়। কিন্ত তিনি ঘৃণাভরে উক্ত প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ওই সালে সেনাবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে এবং কনকনে শীতের রাতে অমানবিক নির্যাতনের করতে থাকে। সেই দুঃসহ স্মৃতি জননেতা আহম্মেদ আলী এখনও বয়ে বেড়ান। পরবর্তীতে এক বছর জেলখানায় ডিটেনশন দিয়ে আটকে রাখে এবং পরিবার ও দলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখে।

১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের সময় তিনি সর্বদা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল আন্দোলনের জীবন বাজি রেখে কাজ করেছিলেন এবং রাজপথ দখল নিয়েছিলেন। তিনি হুলিয়া মাথায় নিয়ে ১৯৯৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি অবৈধ নির্বাচন বানচাল করেছিলেন এবং বিভিন্ন নির্বাচন স্থগিত করার বাধ্য করেছিলেন। ওই আন্দোলনের সময় প্রায়ই ১২টি মিথ্যা মামলার স্বীকার হন। মাদকসেবীদের হাত থেকে গাংনীর পৌরসভাকে মুক্ত রাখার জন্য মাদকসেবী নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করেন এবং গাংনী পৌর এলাকাকে মাদকমুক্ত করেছিলেন। গাংনী সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যখন দালালদের দৌরাত্বে বেড়ে যায়। এবং দুর্নীতির আঁকড়ায় পরিণত হয়। এ দুর্নীতি সহ্য করতে জনসাধারণ নাজেহাল হয়ে পড়ে। আর এ দুর্নীতির আঁকড়া মুক্ত করেছিলেন এবং সরকারি জায়গায় পুনরায় সাব-রেজিস্ট্রার কাজ চালু করেন। যা অদ্যাবদি ওই স্থানেই রয়েছে।

গাংনী পৌর নির্বাচনে তৃতীয় বার নির্বাচিত মেয়র হিসাবে জননেতা আহম্মেদ আলী দায়িত্ব পালন করার কারণে পৌর এলাকায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এবং সরকারের পতনের নানা কৌশল অবলম্বন করে জামায়াত-বিএনপি এবং ছাত্র শিবির মাথাচাড়া দিতে পারেনি। মহামারী করোনা কালীন সময়ে তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। করােনা মহামারীর কারণে গরীব-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্য সামগ্রী অসহায় মানুষের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :