গাংনীতে পাঁকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট পতঙ্গরা ভিড় করছে গাছে গাছে

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  06:57 AM, 11 May 2023

জাতীয় ফল হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত কাঁঠাল। এটি শুধু পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলই নয়, অর্থকরী ফল হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। আবার কাঁঠাল কাঠের তৈরি আসবাবের কদর দেশজুড়ে। সেই কাঁঠাল এখন পাওয়া যাচ্ছে মেহেরপুরের গাংনীর সর্বত্র। কাঁঠাল গাছগুলিতে ঝুলন্ত কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোন কোন এলাকায় আগাম জাতের কাঁঠালগুলি পাঁকতে শুরু করেছে। পাঁকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট পতঙ্গরা ভিড় করছে গাছে গাছে। আর সেই আনন্দে বাগান মালিকরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত। তবে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করণের কোন সুবিধা না থাকায় এ এলাকার মানুষেরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাঁঠাল গাছগুলো ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত ফল ধরেছে। বছর দশেক আগেও আম কাঠালের বাগান ছিল। এখন শুধু আমের বাগান রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ কাঁঠাল গাছ বাগানভিত্তিক না। বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দুই ধারে, স্কুল-কলেজ চত্বরে প্রচুর কাঁঠাল গাছের দেখা মেলে। অভাবের কারণে অনেকে কাঁঠালের গাছ বিক্রি দিচ্ছে। আসবাবপত্র প্রস্তকারী ও ব্যবসায়ী এসব নামমাত্র মূল্যে কিনে ফায়দা লুটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা জানান, হাট-বাজারগুলোতে পাঁকা কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই আছেন প্রতি বছরই প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেন। দুই থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম। এ সময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের ফলনও ভালো হয়েছে। গত বছরে কাঁঠাল কম ধরেছিল তাই দাম একটু বেশি ছিল। এবার অনুকুল আবহাওয়ার কারণে ফলন বেশি হয়েছে। তাই অনেক কম দামে কাঁঠাল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়িরা।
এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেছেন, অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যত তৎপরতা লক্ষ করা যায়, কাঁঠাল নিয়ে তার সিঁকি ভাগও হয় না। অথচ কাঠাল একটি অর্থকরী ফসল ও জাতীয় ফল। কোন পৃষ্ঠপোশকতা না থাকায় ও অবাধে কাঠাল গাছ নিধন হওয়ায় এখন কোন বাগান পাওয়া যায় না। বাড়ির আঙ্গিনাতে বা রাস্তার ধারে অনেকেই গাছ লাগান। সরকার একটু নজর দিলেই অনেকেই কাঠাল বাগানে উদ্বুদ্ধ হতো।
কাঁঠালের গুণাগুণ ও পুষ্টিগুণ নিয়ে পুষ্টিবিদ ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, কাঁঠাল একটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধশালী ফল। একটি কাঁঠালের পৃথক কয়েক প্রকার ভিটামিন ও পুষ্টি রয়েছে। পাঁকা কাঁঠাল ও তরকারি হিসেবে কাঁঠাল খেলে আলাদা ভিটামিন পাওয়া যায়। কাঁঠালের বিচিতে পর্যাপ্ত পুষ্টি রয়েছে। তা ছাড়া কোনো প্রকার কীটনাশক ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে কাঁঠাল হয়ে থাকে। প্রতিটি মৌসুমেই মানুষকে পর্যাপ্ত কাঁঠাল খাওয়া উচিত। কারণ কাঁঠাল একটি রোগ প্রতিরোধক খাবার বলেও পরামর্শ দেন তিনি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আব্দুর রউফ জানান, কৃষিপণ্য কাঁঠাল মুলত একটি মৌসুমী সুস্বাদু ফল। কাঁঠালের বিচি তরকারীতেও সমান জনপ্রিয়। এলাকায় কোন কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার বাবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থাপনা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।

 

আপনার মতামত লিখুন :