গাংনীতে জমি জালিয়াতি। থানায় জিডি করেও হাতুড়ি পেটা থেকে রক্ষা হয়নি বাদীর

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  09:45 PM, 27 October 2020

(ফলোআপ)কুষ্টিয়ার পর এবার মেহেরপুরের গাংনীতে জমি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় পরিচয় পত্র ও জমির মালিকের সই স্বাক্ষর জাল করে ৬৩ শতক জতি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার দেবীপুর গ্রামের পিতা পুত্র সহ একটি চক্রের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় মামলা হলেও দীর্ঘ ১০ বছরেও কোন সূরহা হয়নি। বরং মামলা দায়ের করা ও আদালতে স্বাক্ষী দিতে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছে জমির মুল মালিক দাবিকারী কাজিপুর বর্ডার পাড়ার আফতাব আলী।

কাজিপুর বর্ডার পাড়ার আফতাব আলী জানান,১৯৯৩ সালের১৪ আগষ্ট তেরাইল মৌজার ১৬শ’৩৭ দাগে ৬ হাজার ৭শ’৭৩ দলিল মুলে দেবিপুর গ্রামের প্রাক্তন ইউপি সদস্য আলফাজ হোসেনের স্ত্রী টুলুআরা’র কাছ থেকে ২৬.৫০ শতক ও ১৯৯৬ সালের ১২ অক্টোবর তেরাইল চেয়ারম্যান পাড়ার সৈয়দ আলীর ছেলে কিতাব আলীর সাথে ১৫৪০/৪১ নং দাগে সাড়ে ২৩ ক্রয় করি (দুজনের কাছ থেকে ক্রয়কৃত মোট জমির পরিমান ৬৩ শতক)। জমি থেকে আমার বাড়ি অন্তত ১০ কিলোমিটার হওয়ায় ফসল ফলানো সম্ভব নয় একারনে জমি ক্রয়ের পর থেকে দেবীপুর গ্রামের নিকট আন্ত্রীয় ফজলুল হকের কাছে ফসল দেওয়ার চুক্তি করা হয়।

চুক্তি মোতাবেক ২০০৭ সাল পর্যন্ত ফসলের ভাগ দিলেও ২০০৮ সাল থেকে ফসলের ভাগ দিতে গড়িমশি শুরু করে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক ভাবে বসেও কোন সূরাহ হয়নি। এরপর ২০১০ সালের ৪ ফেব্রæয়ারী অন্যএকজন ব্যক্তিকে আফতাব আলী সাজিয়ে ফজলুর রহমান তার ছেলে মামুন অর রশিদের নামে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়। যার দলিল নং ১২৬৫।

বিষয়টি জানতে পেরে দেবীপুর গ্রামের মামুন অর রশিদকে ১ নং,তার পিতা ফজলুর রহমানকে ২ নং,একই গ্রামের ইউসুফ আলীকে ৩ নং,ছাবদার আলীকে ৪ নং ও কাজিপুর গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য খবির উদ্দীনকে ৫ নং ও দলিল লেখককে ৬ নং বিবাদী করে সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করি। মামলা নং ১২৬/২০১০ ইং।

মামলাটি বর্তমানে স্বাক্ষী পর্যায়ে রয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন ভাবে হত্যার হুমকি প্রদান করে আসছে। হুমকির অংশ হিসেবে গত ২০১১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাত্রী সাড়ে ১০ টার সময় মামলার ১ নং বিবাদী মামুন অর রশিদের মোবাইল ফোন থেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর গাংনী থানায় একটি সাধারন ডায়েরি (জিডি) করি। যার নং ১১৩২।

এরপর ২০১২ সালের ৩১ জুলাই আমাকে (আফতাব আলী) সহ কয়েকজনকে মারধর করে। আবার আমাকে ১ নং আসামী করে ৭ জনের নামে গাংনী থানায় মামলা দায়ের করে ফজলুর রহমানের ছেলে মামুন অর রশিদ। গাংনী থানার মামলা নং ২ তাং ০২.০৮.২০২১২ ইং।

এরপরও বিভিন্ন মারধর ও হত্যার হুমিক দিতে থাকে এসবের কোন প্রতিকার না পাওয়ার কারনে বারবার আমার উপর হামলা করা হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মেহেরপুর আদালতে মামলার স্বাক্ষী দিতে যাওয়ার পথে মামুন অর রাশিদ সহ তার সহযোগিরা আমার উপর হামলা করে মারধর করার পর মাথা ফাটিয়ে দেয়। বামুন্দি বাজারের ব্যাবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে হামলায় ব্যাবহৃত হাতুড়ি ও হেলমেট ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে রক্ত মাখা শরীর নিয়ে আদালতে স্বাক্ষী দিই। এরপর থানায় এসে হাতুড়ি পেটা করার ঘটনায় গাংনী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ার কারনে এখন পর্যন্ত মামলা রেকর্ড বা নথিভুক্ত হয়নি।

মামুন অর রশিদ জানান, আফতাব আলী তাদের কাছে জমি বিক্রি করে এখন অস্বীকার করছে। এই জমি নিয়ে অনেক ঘটনা ঘটেছে। কোন এক সময় দেখা করে সব বলবো।

গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান জানান,আফতাব আলীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

আপনার মতামত লিখুন :