গাংনীতে আসন্ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, থানায় মামলা

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  12:01 AM, 31 October 2021

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা মটমুড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাশেম ও সতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহমেদ ও ইউপি সদস্য মোতালেব হোসেনের পোস্টার ছেড়াকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাশেম ও সতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহমেদ পাল্টাপাল্টি অভিযোগের তীর ছুড়ে দিয়েছে।গতকাল শুক্রবার(২৯অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান বাজারে এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজন আহত হয় এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহমেদ এর আনারস মার্কার পোস্টার এবং মেম্বার পদপ্রার্থী মোতালেব হোসেনের টিউবওয়েল মার্কার পোস্টার ছিড়ে দেয়। এ ঘটনায় গাংনী থানায় ৩১ জনকে আসামী করে অজ্ঞাত ১৫০ জনের নামে মামলা হয়েছে।
সতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আহমেদ অভিযোগ তুলে বলেন, আবুল হাশেম নিশ্চিত পরাজয় জেনে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করার চেষ্টা করছে। রাতের আধারে লোকজন নিয়ে এসে আমার ও সদস্য মোতালেব হোসেনের পোস্টার ছিড়েছে এবং আমার কর্মীদের উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। আমি তার এহেন কৃতকর্মের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সেই সাথে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছি।
অপরদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাশেম অভিযোগ তুলে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার পর আমরা প্রায় ৭০ টি মোটরসাইকেল ও একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করি। রাত ১১ টার দিকে ছাতিয়ান বাজারে পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা সোহেলের ক্যাডার বাহিনী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় পেছন থেকে হামলা করে। এ সময় আমার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আবুল হোসেন মিলিটারী ও ভাতিজা গালিবকে আটকে রেখে মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সেই সাথে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

মেম্বার পদপ্রার্থী মোতালেব হোসেন জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে আওয়ামীলীগ মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হাশেম ও তার আনুমানিক ৩০/৪০ জন সমর্থক মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে করে ছাতিয়ান বাজারে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে। সেই সাথে স্বতন্ত্রপ্রার্থী সোহেল আহমেদের আনারস মার্কার ও আমার টিউবওয়েল মার্কার পোস্টার ছিড়তে থাকে এবং নানান ভাষায় হুমকী ধামকী দিতে থাকে। তাদের আচরণে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় আবুল হোসেন মেলেটারী ও গালিব নামের দুজনকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের কাছে তাদের সোপর্দ করা হয়।

স্থানীয় মিন্টু মিয়া সহ গ্রামবাসীর অভিযোগ জানান, নৌকা সমার্থিত প্রার্থী আবুল হাশেমের নেতৃত্বে তার লোকজন দেশী অস্ত্র সহ মটমুড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান বাজারে এসে সোহেল আহমেদ সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং পোস্টার ছিড়তে থাকে। আমাদের বলে দোকানে যদি সোহেলের কোন পোস্টার লাগানো থাকে তাহলে দোকান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে।

এসময় তাদের আচরণে স্থানীয় লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ করে। এসময় হাশেমের সমর্থকদের সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় গালব ও আবুল হোসেন মিলেটারীকে আটক করে জনতা। পরে স্থানীয় খাইরুল ইসলাম সেখান থেকে আবুল মেলেটারীকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যায়। পরে কুমাড়ীডাঙ্গা ক্যাম্পের পুলিশ আসলে তাদের হাতে তুলে দেয়।
কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মুস্তাফিজুর রহমান জানান, আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেছি। আটককৃতদের উদ্ধার করে তাদের নিকট আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করেছি। আমার জানা মতে তারা এখন গাংনী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন :