গাংনীতে অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে কমেছে আমের স্বাদ, লোকসানের আশঙ্কা বাগান মালিক ও ব্যবসায়িদের

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  01:26 PM, 16 May 2023

মেহেরপুরের গাংনীতে সপ্তাহ খানেক আগেই শুরু হয়েছে পাঁকা আম বিক্রি শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের বেধে দেয়া সময় না মেনেও অনেকেই গোপনে আম সংগ্রহ করে তা বাজারজাত শুরু করে দিয়েছেন । ক্রেতারা বলছেন, চলতি মৌসুমে বাজারে যে আম পাওয়া যাচ্ছে তা অতীতের তুলনায় স্বাদ ও রস কম, আবার আকারেও ছোট। খেতে ও টক। ফলে ভাল দাম না পাওয়ার শঙ্কা ব্যবসায়িদের। বৈরী আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন কৃষি অফিস।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ‍্যমতে, এ উপজেলায় বিভিন্ন জাতের ৮৯৫ হেক্টর আমবাগান রয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৮১৫ মেট্রিক টন। বোম্বাই, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আমরুপালি, বিশ্বনাথ ও ফজলি উল্লেখ্য। চলতি সপ্তাহের ১৫ মে শুরু হয়েছে বোম্বাই জাতের আম বাজারজাত। আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে। আর বিদেশে রপ্তানী হবে হিমসাগর আম। তবে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমে আকার বেশ ছোট আর স্বদ কিছুটা কম।

আম ব‍্যবসায়ী কামারখালীর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিনি গেল বছর ৫ বিঘা বাগান কিনেছেন। গেল বছর লাভের অংশ কিছুটা কম হয়। চলতি বছরে আমের মুকুল এসেছিল প্রচুর। অনেক লাভ হবার কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। বেশি দাম দিয়েই সেই গাছের আম কিনে বাজারে বিক্রি শুরু করেছি। তবে আম বিক্রির পরে অনেক ক্রেতা এসেই অভিযোগ করেছে, আমে রস ও মিষ্টি অনেক কম। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বাগানের আম ঝরে গেছে। এবার লোকসান গুণতে হবে।

আম ব‍্যাবসায়ী গাংনী উপজেলার রমিক হাসান জানান, তারা ছয়জন মিলে প্রায় সত্তর বিঘা জমির আম বাগান কিনেছেন। গাছে আমের মুকুল দেখে বাগান কেনা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেই আম বিক্রি করা হয়। কয়েকদিন আগে বোম্বাই জাতের ও আটি আম বিক্রি করা হয়। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, আমের স্বাদ নেই ও টক। ফলে কেউ কিনতে চাচ্ছেন না। এবার আমে লোকসান গুণতে হবে।

ঝোড়পাড়ার আম বাগান মালিক মইনুল ইসলাম জানান, তার বাগানে ৩০০ আমের গাছ আছে। এবার শুরু থেকেই বাগানে সেচ দেয়া শুরু হয়েছে এখনো তা চলমান রয়েছে। এবছর গাছে আম টেকাতেই অনেক খরচ হয়ে গেছে। তবে এ বছর গাছের আম তুলনামূলক অন‍্যাবারের চেয়ে ছোট। আবার আমও আগে ভাগে পাকতে শুরু করেছে। সে হিসেবে মনে হচ্ছে আমে এবার পয়সা পাওয়াটা কঠিন হয়ে যাবে।

আম ক্রেতা গরু ব্যবসায়ি ইব্রাহিম জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে হবে বাজারে পঁাকা আম বিক্রি শুরু হয়েছে। ভাল জাতের আম দেখে বাড়ির জন্য কিনে আম কাটার পর দেখা যায়, আমের রং ভিতরে সব ঠিকঠাক থাকলেও রসের পরিমাণ কম। সেই সাথে খেতেও বেশ টক। একই কথা জানালেন, গাংনী ভিটাপাড়ার শামীম। তিনি জানান, বাজারে নতুন আম উঠেছে। নতুন ফল হিসেবে কিনে দেখি আম দেখতে সুন্দর হলেও স্বাদ কম।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার শেখ মোহাম্মদ ইমরান হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও তাপদাহের কারনে অনেক গাছের আম আগেই মেচিউর হয়ে পাঁকতে শুরু করেছে। সেগুলোর তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট হওয়ার পাশাপাশি স্বাদও কিছুটা কমেছে । তবে প্রকৃতির উপরেতো কারোর হাত নেই। আর বতর্মান সময়ে যদি বৃষ্টি হয়। তাহলে আগামী বিশ পচিশ দিনের মধ্যে যেসব আম মেচিউর হবে সেগুলোর স্বাদ কিছুটা বাড়বে। তাছাড়া এবারও হিমসাগর আম দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

আপনার মতামত লিখুন :