করোনায় বিপর্যস্ত ভারতে প্রতি মিনিটে আক্রান্ত ২৪৩

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  07:17 AM, 26 April 2021

মহামারি করোনার প্রকোপে ভারতের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটির বিপর্যয়কর কোভিড সংকট দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা। আর প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের বিশ্বরেকর্ড ভাঙছে দেশটি।

করোনার দ্বিতীয় দফার প্রকোপে ভারতের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। বেশিরভাগ হাসপাতালেই দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের তীব্র সংকট। অনেক হাসপাতাল তাই রোগী ভর্তি নিচ্ছে না। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রোববার অক্সিজেন চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন।

মিনিটে ২৪৩ জন আক্রান্ত

রোববারের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৩ লাখ ৪৯ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে টানা ৫ দিন ধরে ভারতে দৈনিক সংক্রমণ ছাড়াল তিন লাখের ঘর।

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে রেকর্ড ২ হাজার ৭৬৭ জন মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। আগের দিন এই সংখ্যাটা ছিল ২ হাজার ৬২৪ জন। অর্থাৎ ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় গড়ে প্রতি মিনিটে ২৪৩ জন আক্রান্ত এবং দুই জন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায় শ্মশানে জায়গা না থাকায় যত্রতত্র মরদেহ পোড়ানো হচ্ছে।

তিন দিনে দশ লাখের বেশি আক্রান্ত

শুধু গত তিন দিনে ভারতে দশ লাখের বেশি মানুষের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। কয়েক মাস আগের চেয়ে বর্তমানের এ চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ওই সময় ভারতের আক্রান্তের তালিকায় নতুন করে দশ লাখ রোগী যুক্ত হতে সময় লেগেছিল ৬৫ দিন।

এমনকি গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতে যখন প্রথম দফায় করোনা সংক্রমণের চূড়া চলছিল তখনও নতুন করে দশ লাখ রোগী আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল অন্তত ১১ দিন। সবচেয়ে বড় কথা ভারতে টানা ১৯ দিন ধরে ছয় সংখ্যার বেশি মানুষ দৈনিক আক্রান্ত হয়েছেন।

ভারতের দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার রোববারের প্রতিবেদনে এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়েছে, ভারতে দ্বিতীয় দফায় যে দিন থেকে দৈনিক আক্রান্ত লাখ ছাড়িয়েছে, তারপর বাকি দিনগুলোতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৪২ লাখের বেশি মানুষ।

সক্রিয় রোগী বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে

প্রথম দফার সংক্রমণের চূড়া দেখার পর ভারতে দৈনিক সংক্রমণ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। ওই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার। ওই সময় সুস্থতার হারও ছিল সর্বোচ্চ।

তবে দ্বিতীয় দফা প্রকোপ শুরুর পর সেই সংখ্যাটা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। মাত্র দুই মাসের মাথায় ভারতের সক্রিয় করোনা রোগী এখন ২৬ লাখের বেশি। এই সময়ে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১৩ গুণ বেড়েছে।

সক্রিয় রোগীর সংখ্যা যত বেড়েছে তত হাসপাতালে আইসিউ বেড আর অক্সিজেনের তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়লে অনেকেরই অক্সিজেন সাপোর্ট এবং আইসিউতে রাখার প্রয়োজন পড়ে।

ভারতে করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র প্রদেশ। দেশটিতে এখন মোট সক্রিয় করোনা রোগীর ২৬ শতাংশই ওই রাজ্যের। এরপর ভারতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় রোগীর তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক এবং কেরালা রাজ্য।

আপনার মতামত লিখুন :