১৯ বছরে ৪শ’ ৬১ কোটি টাকা লোকসান কুষ্টিয়া চিনিকলে
পাহাড় সমান লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে কুষ্টিয়া চিনিকলের আখমাড়াই কার্যক্রম বন্ধ
অর্থ সংকট, দেনার দায় আর পাহাড় সমান লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে নুয়ে পড়া কুষ্টিয়া চিনিকলের আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হলো।
আগামী ২৫ ডিসেম্বর ২০২০-২০২১ মৌসুমের আখমাড়াই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরেই এ মিল বন্ধের কথা শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে আজ বুধবার সকালে চলতি মৌসুমের আখ মাড়াই বন্ধের ঘোষনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন।
গত ৭ মাস ধরে বেতন পান না এখানকার শ্রমিক-কর্মচারীরা। আখ চাষিরাও পায় না তাদের দীর্ঘদিনের পাওনা টাকা। মিলে উৎপাদিত ২১ কোটি টাকার চিনি আর ৫ কোটি টাকার চিটাগুড় অবিক্রিত থাকার কারনে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির অচলাবস্থা। এরপর মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করায় চরম হতাশ শ্রমিক-কর্মচারী ও আখ চাষিরা।
কুষ্টিয়া চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুর রহমান খান জানান, কুষ্টিয়াসহ একযোগে ৬টা মিলের শুধুমাত্র আখ মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার যে আখগুলো রয়েছে তা দর্শনা, মোবারকগঞ্জ ও ফরিদপুর চিনিকলে দেওয়া হবে।
কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে জগতি নামক স্থানে ১৯৬১ সালে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৯৬৫ সালে সমাপ্ত হয়।
১৯৬৫-৬৬ মৌসুম থেকে এটি চিনি উৎপাদন শুরু করে। স্বাধীনতার পর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। লাভজনক এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সাল থেকে লোকসানের মুখে পড়ে। এরপর প্রতি বছরই লোকসানের পরিমান বাড়তে থাকে।
গত ১৯ বছরে ৪শ’ ৬১ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে মিলটি। আর গেল মৌসুমে ৬১ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এভাবেই নানা সংকটে কুষ্টিয়া চিনিকল বন্ধের কথা চলছিল। এর প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল শ্রমিকরা।