১৪ দিন পানির নিচে কুমারখালী উপজেলা চত্ত্বরের রাস্তা, ভোগান্তি চরমে
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে চলাচলের একমাত্র পাকা রাস্তাটি এখন পানির নিচে। টানা ১৪ দিন পানির নিচে থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে চলাচলকারীদের। পরিকল্পিত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ভোগ হচ্ছে – বলে জানায় রাস্তাটি ব্যবহারকারীরা।
জানা গেছে, এবার আষাঢ় এসেছে তার স্বরূপে। আষাঢ় মাসের প্রথমদিন ( ১৫ জুন) দিকেই ভারি বৃষ্টি। হালকা ও ভারি বৃষ্টি চলে টানা সাতদিন। প্রথমদিনের বৃষ্টিতেই উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি চলে যায় পানির দেড় ফিট নিচে। গত সাতদিনে নতুন করে কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। তবুও রাস্তাটি এখনও পানির নিচে। এতে প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অন্ততপক্ষে উপজেলার ৪০ টি দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ হাজারো সেবা গ্রহিতা।
আরো জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমারখালী উপজেলা পরিষদ। পরিষদ গঠনের ৩৮ বছর পার হলেও নির্মাণ করা হয়নি পানি নিষ্কাশনের পরিকল্পিত ব্যবস্থা। এতদিন পরিষদ চত্ত্বরের আশেপাশে কিছু ডোবা পকুর ছিল। সেখানে পরিষদ চত্ত্বরের পানি প্রবাহিত হত। কিন্তু ডোবা গুলো ভরাট হওয়ায় এখন জলাবদ্ধতা।
কুমারখালী উপজেলা পরিষদের প্রধান প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকতেই বামে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়। জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে একার্যালয়। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, রাস্তার জলাবদ্ধতায় খুব সমস্যায় পড়েছি। সবাই আমার অফিসের বারান্দা দিয়ে পকেট রাস্তায় চলাচল। পকেট পথ অবরোধ করেও চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছেনা।
কুমারখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার অধিকাংশ সেবা গ্রহিতারা হেটেই অফিসে আসে। প্রধান রাস্তায় পানি থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছি আমি, অফিসের স্টাফ সহ সকল সেবা গ্রহীতারা। তিনি আরো বলেন, অনেকটা বন্ধী জীবন যাপন করছি। এটার একটা সুরহা হওয়া দরকার।
কুমারখালী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ বলেন, এতদিন হয়ে গেল, পানি অপসারণ হলোনা। গাড়ি ও মানুষ পানি মাড়িয়ে অফিসে আসতে হয়। চরম ভোগান্তি হচ্ছে চলাচলের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বলেন, প্রধান রাস্তায় হাটু সমান পানি। পানি পেরিয়ে শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। ছেলেরা কাপড় উচুঁ করে যায়। মোটরসাইকেলে যায়। কিন্তু মেয়েের জন্য খুবই সমস্যা হচ্ছে।
এবিষয়ে কুমারখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দিন বলেন, জুনমাসে স্কুলের অফিসিয়াল কাজ থাকে। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষকেরা বিভিন্ন কাজে অফিসে আসে। বৃষ্টি হলেই অফিসের সামনে ও প্রধান রাস্তায় পানি জমে। এতে বেশ ভোগান্তি হয়। তিনি আরো বলেন, জলাবদ্ধতার সমস্যা একাধিক সভায় জানিয়েছি। কিন্তু বাস্তবে কোন লাভ হয়নি।
জলাবদ্ধতার এমন দুর্ভোগ স্বীকার করে কুমারখালী
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ভোগ। রাস্তাটি উচুঁ করে নির্মাণ করার বিষয়ে প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। এছাড়াও ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য পৌরসভাকে জানানো হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান বলেন, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই পরিষদ চত্ত্বরে পানি জমে। চলাচলের ভোগান্তি হয়। বিষয়টি পৌরসভাকে দেখা উচিৎ।