সরকার ঘোষিত ৩য় দফা লক ডাউনে বিপাকে মুজিবনগরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুুষ
করোনার দ্রুত সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। এবারের বিধিনিষেধে কলকারখানা খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হলেও বিপণিবিতান, রেস্তোরাঁ, সবজি বিক্রেতাসহ কম পুঁজির ব্যবসায়ীদের ওপর তুলনামূলক কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সীমিত পরিসরে অফিস, ব্যাংক খোলা রাখা হলেও খড়্গ পড়েছে লাখ লাখ ছোট ব্যবসায়ীর ওপর। ইতিমধ্যে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা মাঠে নেমেছেন।
করোনা ভাইরাসের দ্বিত্বীয় ঢেও এর আঘাতে সারাবিশ্ব যখন অসহায়, জনজীবন, অর্থনীতি যখন স্থবির, বাংলাদেশে যখন করোনা সংক্রমনের মাত্রা ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাচ্ছিল তখন বাংলাদেশ সরকার দেশের জনগনকে রক্ষা করতে ১৪ই এপ্রিল বছরের ১ম এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করে। সংক্রমনের মাত্রা কম না হওয়ার কারনে ২য় দফা এবং ৩ দফা ২৮শে এপ্রিল পর্যন্ত লক ডাউন জারি করা হয়।
সরকার ঘোষিত ৩য় দফা লক ডাউনে বিপাকে পড়েছে মুজিবনগরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ খেটে খাওয়া মানুুষ। মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা কেদারগঞ্জ বাজারে ব্যবসায়ীরা বলেন, গত রমজানের ঈদে ব্যবসা করতে পারিনি, তাই আমরা আসন্ন ঈদে বেচাকেনার জন্য ব্যাংক থেকে লোনের উপর টাকা নিয়ে বেশি বেশি মাল তুলেছি। আমরা ব্যাংক লোনের উপর প্রতিষ্ঠান চালাই কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত ৩য় দফা লকডাউনে পারছি না ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা ব্যাংক লোন পরিশোধ করবো কিভাবে আর দোকান চালাতে না পারা এবং ব্যবসা বন্ধ থাকার কারনে দোকানের কর্মচারীদের বেতন দিতে হিম শিম খাচ্ছি আমরা।
আবার কেউ বলছে দোকানের ভিতরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার টাকার মাল। এতে করে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। অনেক সময় বাড়ি থেকে এনে দিতে হচ্ছে দোকানের ভাড়া কেউ কেউ তাও দিতে পারছেন না।
কেদারগঞ্জ বাজারের সেলিম সু গার্ডেন এর মালিক সেলিম রেজা বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে আমি প্রায় ১০ লক্ষ টাকা লোন করে এবারে ঈদ উপলক্ষে দোকানে মাল তুলেছি, আশা ছিল এবার ঈদে ব্যবসা ভাল হবে, কিন্তু লকডাউনের কারনে দোকান খুলতে পারছি না। এদিকে আমাকে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা কিস্তি দিতে হবে, সাথে আছে কর্মচারির বেতন, দোকান ভাড়া সহ আনুসাঙ্গিক সব খরচ মিলে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ, দোকান না খুলতে পারলে কিভাবে কি করবো আমি বুঝে উঠতে পারছি না।
বাজারের মাষ্টার বস্ত্রবিতানের মালিক ফয়েজ আহমেদ, আলামিন বস্ত্রবিতানের মালিক আলামিন হোসেন, সহ ছোট বড় প্রত্যেক দোকানির অবস্থা একই রকমের। তবে আগামী ২৫ তারিখ থেকে স্বাস্হ্য বিধি মেনে সকল দোকানপাট খুলে দিবে এ রকম খবর পেয়ে উপজেলার ব্যবসায়ীদের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি বিরাজ করছে।
লক ডাউনের জেরে সমস্যা যে বাড়ছে দিন মজুরদের তা অস্বীকারও করার কিছু নেই। কিন্তু বিকল্প কোনও পথ যে খোলা নেই। লক ডাউনের যেরে চরম বিপাকে মুজিবনগর এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ।