শেরপুরে হত্যা ও ধর্ষণের পৃথক ঘটনায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
শেরপুরে চাঞ্চল্যকর তাজেল হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং চতুর্থ শ্রেণিপড়–য়া এক শিশু ধর্ষণ মামলায় আরও একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারান্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ের আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদÐ দিয়েছে আদালত। আজ ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান এসব রায় ঘোষণা করেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন সদর উপজেলার চান্দেরনগর চক্কারপাড় গ্রামের মৃত আহসান শেখের ছেলে বাদশা মিয়া, তার ছেলে ফকির আলী ও আলিনাপাড়া গ্রামের মৃত মিরাজ আলীর ছেলে হাসমত আলী। অন্যদিকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন দÐপ্রাপ্ত আশরাফুল (৩৩) নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাও ইউনিয়নের ধোপাকুড়া গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর সদর উপজেলার চান্দেরনগর গ্রামের দিনমজুর তাজেল মিয়াকে পূর্বশত্রæতার জের ধরে বাদশা মিয়া, ফকির ও হাসমতসহ কয়েকজন লোহার রড, লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন তাজেলের ভাই মোঃ জিয়ার বাদী হয়ে সদর থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১২ জুন ৭ জনকে আসামি করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সজীব খান। বিচারিক প্রক্রিয়ায় মামলার বাদী, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকসহ ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি এবং আসামি পক্ষে ছিলেন এডভোকেট আলমগীর কিবরিয়া কামরুল।
এদিকে ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর ঈদের দিন নালিতাবাড়ী উপজেলার ধোপাকুড়া গ্রামে ব্র্যাক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীকে (১২) ফুসলিয়ে ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে একই গ্রামের বখাটে যুবক আশরাফুল। এ ঘটনায় ১৭ অক্টোবর নালিতাবাড়ী থানায় আশরাফুলকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ওই শিশুর পিতা। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বাদী, ভিকটিম, জবানবন্দি গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি আশরাফুল পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় ঘোষণা করেন বিচারক।