শিশু সানজিদা হত্যা মামলায় ১৬৪ ধারায় ফুফু সুমনা’র চাঞ্চল্যকর তথ্য !
(ফলোআপ)প্রেমে বাধা দেওয়া এবং ভাবির সোনার চেন চুরির অপরাধ ঢাকতে এবং ভাবির ওপর রাগের জের ধরে ৭ বছরের শিশু সানজিদা খাতুনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে । হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে নিহত সানজিদার আপন ফুফু সুমনা (১৫) । এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত শিশুর মা রেবেকা খাতুন বাদি হয়ে সোমবার (১৯ অক্টোবর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন । মামলা নং—৯ । মামলার আসামী সুমনা খাতুনকে রোববার রাতে ইবি থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে নিহতের পরিবার ও ইবি থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমান রতন ।
নিহত সানজিদা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের পূর্ব আব্দালপুর গ্রামের কাচারি পাড়া এলাকার সোহাগ হোসেনের মেয়ে এবং আসামী সুমনা মৃত সুরাপ হোসেনের মেয়ে । সুমনা হরিনারায়ণপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী। কুষ্টিয়া বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে তথ্য প্রকাশ করে সুমনা ।
প্রতিবেশীরা জানায়, সানজিদা রোববার দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে না আসায় বিকেলে হরিনারায়ণপুর বাজারে মাইকিং করেন বাবা সোহাগ হোসেন । এরপরও তার হদিস না পাওয়ায় খোঁজ চলতে থাকে। সন্ধ্যার পর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা কাচারি মাঠের পাশে একটি পরিত্যক্ত টয়লেটে একটি শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে । পরে সানজিদার পরিবারের লোকজন এসে মরদেহ চিহ্নিত করে । সানজিদার মরদেহটি শোয়ানো অবস্থায় মেঝেতে ছিল । তার হাত—পা মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ।
এলাকাবাসী জানায়, ভূমি অফিসের ঝাড়ুদার শখা খাতুনকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করলে এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে অনেক তথ্য মিলতে পারে । ভূমি অফিসের ওই পুরাতন ঘরে শখা খাতুন নিয়মিত থাকে । ভূমি অফিসার তার নিকট চাবি দিয়েছে ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রতন জানান, নিহত সানজিদার মা রেবেকা খাতুন ঘাতক সুমনার প্রেমে বাধা দেয়। মাঝেমধ্যেই বকাবাধ্য করতো সুমনাকে । কিছু দিন আগে সুমনা তার ভাবির সোনার চেন চুরি করে গোপনে ১৫০০ টাকায় বিক্রি করে এবং একটি মোবাইল ক্রয় করে । ওই মোবাইল দিয়ে তার প্রেমিকার সাথে কথা বলতো । এই সোনার চেন চুরির ঘটনা দেখে ফেলে নিহত শিশু সানজিদা । ওই ঘটনা দেখার পর তার বাবাকে বলে দেয় । ভাবির উপরের রাগের ক্ষোভে এই হত্যার ঘটনা ঘটায় । ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে ঘাতক সুমনার ফুফু হরিনারায়ণপুর ইউনিয়িন ভূমি অফিসের ঝাড়ুদার শখা খাতুন ভূমি অফিসের পুরাতন ভবনে থাকে শখা খাতুন । সেখানে সানজিদাকে ডেকে নিয়ে আসে ঘাতক সুমনা । ১০টাকা দিয়ে সানজিদাকে ডাল ভাজা আনতে বলে সুমনাকে। এরপর ঘাতক সুমনা ও নিহত সানজিদা ডাল ভাজা খায় । সানজিদা আরও ডাল ভাজা চাইলে ঘাতক সুমনা তাকে থাপ্পড়—চড় মারে। এবং জোরে কাঁদতে নিষেধ করে । তবুও সানজিদা চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করে । তখন সুমনা সানজিদার মুখ চেপে ধরে ও কাথা দিয়ে মুখে চাপা দেয় । পরবর্তীতে গলা টিপে হত্যা করে । ভূমি অফিসের ঝাড়ুদার শখা খাতুনের সাথে যুক্তি পরামর্শ করে নিহত সানজিদাকে হত্যা করে ওই ঘরে তালা দিয়ে রাখে সানজিদা । সুযোগ বুঝে ঘর থেকে নিহত সানজিদার লাশ পরিত্যক্ত টয়লেটে ফেলে দেয় সুমনা ।