আজ শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এদিনে তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন নূর হোসেন।
মৃত্যুর পর নূর হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকার নামকরণ করা হয় শহীদ নূর হোসেন স্কয়ার এবং ১০ নভেম্বরকে শহীদ নূর হোসেন দিবস ঘোষণা করা হয়।
নূর হোসেন ১৯৬১ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। জীবিকার সন্ধানে তার পরিবার ঢাকায় এসেছিল। নূর হোসেনের পরিবার থাকত রাজধানীর পুরনো ঢাকার বনগ্রামে।
নূর হোসেনের বাবা মজিবুর রহমান পেশায় ছিলেন একজন বেবিট্যাক্সি চালক। মা মরিয়ম বেগম গৃহিণী।
নূর হোসেন নিজেও ছিলেন একজন পরিবহন শ্রমিক। গায়ের শার্ট কোমড়ে বাঁধা, পরনে জিন্সপ্যান্ট, পায়ে কেডস, খালি গায়ে বুকে পিঠে লেখা ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’। নূর হোসেনের পুরো শরীরটাই যেন প্রতিবাদি পোস্টার। নূর হোসেনের এ প্রতিবাদ সহ্য করতে পারেনি স্বৈরাচার সরকার। নির্মম বুলেট ছুটে আসে প্রতিবাদি যুবক নূর হোসেনের দিকে।
গুলিবিদ্ধ নূর হোসেনকে যখন একটি রিকশায় করে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক যুবক। গুলিবিদ্ধ নূর হোসেনকে রিকশা থেকে নামিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। নূর হোসেন যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন তখনও একজন পুলিশ সদস্য পায়ের বুট তার বুকের উপর চেপে ধরে। স্বৈরাচারী পুলিশ এমন নিষ্ঠুরভাবে সেদিন নূর হোসেনকে হত্যা করে।
নূর হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন আরও বেগবান হয় এবং স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।