রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা মৌসুমেও পর্যটক শুন্য মুজিবনগরে
হরতাল অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা মৌসুমে মেহেরপুরের মুজিবনগরে পর্যটন খাতে দেখা দিয়েছে মন্দা। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা।
গত ২৯ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধে পর্যটন এলাকা মেহেরপুরের মুজিবনগরে চলছে সুনসান নীরবতা। হরতাল অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভরা মৌসুমেও পর্যটন খাতে দেখা দিয়েছে মন্দাভাব। সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা সমাবেশ, হরতাল ও অবরোধে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেই পর্যটক নেই । এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা। সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দেখতে ভিড় করতেন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠতো স্থানটি। এখানে এসে জানতে পারতেন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশি পর্যটকদেরও পছন্দের স্থান ছিল এটি। মুজিবনগর কমপ্লেক্সকে আরও আধুনিক করতে সরকার যখন হাজার কোটি টাকার নতুন পরিকল্পনা করছেন তখন পর্যটকশূন্য ঐতিহাসিক স্থানটি। শীতের শুরুতে প্রতিদিন কয়েকশ’ বাস, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসতেন স্থানটি দেখতে। কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী, মিনি শিশুপার্ক, ভ্যানচালকসহ নানান পেশার কয়েকশ’ মানুষ এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।
মুজিবনগরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জনি গাংনীর চোখ’কে জানান, এই আম্রকাননে ৭০-৮০ ক্ষুদ্র দোকান গড়ে উঠেছে। হরতাল অবরোধের আগেও প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার বেচাকেনা হত। আরেক ব্যবসায়ী মানিক গাংনীর চোখ’কে জানান, এখন পর্যটক নেই, বেচাবিক্রিও নেই। দোকান খুলে বসে আছি, সকাল থেকে এক টাকারও পন্য বিক্রি করতে পারেনি। চা ব্যবসায়ী পলাশ জানান, এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আমরা এনজিও টাকা কোথায় থেকে দেব।
ভ্যান চালক মাহবুব গাংনীর চোখ’কে জানান, মুজিবনগরে ঘুরতে আসা পর্যটকদের আমরা ভ্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাতে নিয়ে যায়। হরতাল অবরোধের কারণে পর্যটক নেই, তাই বসে বসে দিন কাটাতে হচ্ছে। অটো গাড়ি চালক শিমুল গাংনীর চোখ’কে জানান, স্থানীয় এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অটো গাড়িটি কিনেছি মাসখানেক হলো। প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবাই সবার কষ্ট দেখে কিন্তু গরিবের কষ্ট কেউ দেখেনা।
বাগোয়ান পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন গাংনীর চোখ’কে জানান, মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেস ঘিরে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। চলমান হরতাল অবরোধে বিপাকে পড়েছে এই খাতের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা। সরকারিভাবে রিলিফের চাউল বা অন্যান্য ভাবে তাদের সুযোগ সুবিধা করে দেওয়ার হবে।