মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে মৃত রুগীকে করা হয় রেফার্ড
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আগত রুগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেনা। কথায় কথায় রুগীদের কুষ্টিয়া রাজশাহী সহ অনত্র রেফাড করা হচ্ছে। মৃত রুগীরাও হচ্ছেন রেফার্ড।
২শ ৫০ শয্যা মেহেরপুর জেনারেল হাস পাতালে রুগীরা সুস্থ হতে এসে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দিনের পর দিন হাসপাতালের বেডে বিনা চিকৎসাই ছটফট করছে রুগীরা। আর এ নিয়ে কথা বললেই ঘটে আরো বিপোদ। কথায় কথায় রুগীর ভাগ্যে জুটে রেফার্ড না হয় ছাড় পত্র।
এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসাধিন মৃত রুগীকেও দেওয়া হচ্ছে অন্যত্র রেফার্ড। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বহিবিভাগের চেম্বার বন্ধ রেখে অন্যত্র হারিয়ে যায়। ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে অবশেষে চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে যেতে হয়। আর যে সকল রুগীরা এখানে চিকিৎসা নিচ্ছে তাদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা নার্স এসকল অভিযোগ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রুগী ও রুগীর স্বজনদের।
সরজমিনে গত বৃহস্পতিবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের বহিবিভাগে যেয়ে দেখা যায় প্রায় ৬/৭ জন চিকিৎসকের কক্ষ তালা বদ্ধ। এই তালা বদ্ধ কক্ষ গুলির মধ্যে রয়েছে জুনিয়ন কনসালটেন্ট ইএনটি ডা. এ এস গাজী শরিফ উদ্দিন আহম্মেদ, সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু ডা. মাহবুবুবা তানজিলা, সিনিয়র কনসালটেন ডা. মনিরুজ্জামান, সিনিয়র কনসালটেন্ট কাডেয়লজি, মেডিকেল ডা এমএ রশিদ, মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদা আক্তার। এই সকল ডাক্তারদেরকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মরত কয়েক জন জানান সিনিয়র কনসালটেন্ট কাডেয়লজি, মেডিকেল ডা এমএ রশিদ, সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু ডা. মাহবুবুবা তানজিলা, কনসালটেন্ট চর্ম সজিবুল হক সহ কয়েকজন ডাক্তার ঠিকমতো অফিস করেননা। সপ্তাহে ৩/৪ দিন হাসপাতালে আসেন না। আবার উনারা হাসপাতালে এসে ঠিক মতো আফিস করেননা। সকাল ১১ টার পর হাসপাতালে আসেন দুপুর ১২ টা বাজতে না বাজতে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান।
এ দিকে রুগী দের অভিযোগ হাসাপাতালে এসে তারা সুস্থতার পরিবর্তে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পুরুষ ওয়ার্ডকে শিশু ওয়ার্ডের সাথে একত্রিত করায় কমোলমতি শিশুদের মারাত্মক আক্রান্ত পুরুষ রুগিদের সাথে একত্রে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে দিনের পর দিন বেডে কাতরালেও নাস ছাড়া অন্য ডাক্তারের দেখা পাওয়া ভার। আর এ নিয়ে কথা বললেই ভাগ্যে জোটে হাসপাতালের ছাড়পত্র।
রোগীর স্বজন আরিফুর রহমান বলেন, আমার ফুপু হাটের সমস্যা নিয়ে গত ৪ দিন ধরে হাস পাতালে ভর্তি রয়েছে। কিন্তু কোন চিকিৎসা পাইনি। এই হাসপাতালে কাডিও লজিস্ট কনসালটেন্ট রয়েছেন, তার কাজকি রুগী দেখা নয়? আমি এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ফুপুকে চিকিৎসার বদলে ছাড় পত্র দিয়ে দিয়েছেন।
গাজী ইকবাল আলমের ছেলে নাঈম গাজী বলেন, গত ৩০ নভেম্বর আমার বাবা স্টোক করে। উনাকে হাসপাতালে নিয়ে যেয়ে ভর্তি করি হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষন পরে তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়াওয়ার পরেও হাসপাতালের চিকিৎসক আমার বাবাকে কুস্টিয়া মেডিকেলে রেফর্ড করেন। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে রেফার্ডের কারন জানতে চাইলে তারা ভুলহয়েছে শিকারকরে আমার বাবার ডেথ সাটিফিকেট দেন।
হাসপাতালের আর এমও ডা. মকলেছুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে যেমন, তেমনি সিমিত লোকবল নিয়ে আমরা আমাদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছি। তবে তিনি হাসপাতালের রুগীদেও অভিযোগ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।