মেহেরপুরে ৫৫ ওয়াটার প্লান্টের ৫২টিই নষ্ট: আর্সেনিকে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ
মেহেরপুরে সুপেয় পানির ৫৫ টি ওয়াটার প্লান্টের মধ্যে ৫২ টি অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে এলাকাবাসী। এতে আর্সেনিকে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন কর্তৃপক্ষ প্লান্টগুলো নির্মান করে। তবে তাদের কার্যক্রম মেহেরপুর থেকে তুলে নেওয়ায় রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে প্লান্টগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। দ্রত সময়ের মধ্যে প্লান্টগুলো চালু করার দাবি স্থানীয়দের।
এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর তারানগর, মেহেরপুর সদরের আলমপুর, আমঝুপি, বেলতলাপাড়া, গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা,মানিকদিয়া, তেঁতুলবাড়িয়া সহ বিভিন্ন গ্রামে আর্সেনিকের উপস্থিতি মাত্রারিক্ত পাওয়ায় এসব এলাকায় ২০১৫-২০১৬ সালে আর্সেনিকের ভয়াল থাবা থেকে বাঁচতে সুপেয় পানির জন্য বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন ৫২ আর সরকারী ভাবে ৩টি ওয়াটার প্লান্ট নির্মান করে। এইসব প্লান্টগুলি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সংশ্লিষ্ঠ এলাকায় ১০ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি সমিতি করে দেওয়া হয় যাতে এই সমিতি থেকে কিছু চাঁদা তুলে নষ্ট হওয়া প্লান্গুলি মেরামত করতে পারে। পরবর্তিতে ২০১৮ সালে বেসরকারী সংস্থা সেভ দ্যা চিলড্রেন এর কার্যক্রম গুটিয়ে অন্য জেলায় চলে যায়। এরপর থেকে প্লান্টগুলো রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে অকেজো হয়ে পড়েছে। পাইপে মরিচা ধরেছে । রাতের আঁধারে চুরি হয়ে গেছে অনেক যন্ত্রাংশ। প্লান্টগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় বাধ্য হয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছে এলাকাবাসী। ফলে দিন দিন বাড়ছে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন যাপন করছেন তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, পানির প্লান্ট থেকে আর্সেনিক মুক্ত পানি পান করে এলাকার মানুষ সুস্থ ছিলো। প্লান্টগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন আর্সেনিক যুক্ত পানি পান করে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। যাদের দায়িত্ব আছে প্লান্গুলি রক্ষনাবেক্ষন করার তারা এটা করেনা। সরকারিভাবে প্লান্টগুলো মেরামত করে দেবার দাবি এলাকাবাসিদের।
সিভিল সার্জন( ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ জমির মোঃ হাসিবুস সাত্তার সিদ্দিকী জানান, আর্সেনিক আক্রান্তদের চিকিৎসার চেয়ে এর প্রতিরোধ জরুরী। আর্সেনিকযুক্ত পানি পান ও ব্যাবহার করলে মানুষ আর্সেনিকে আক্রান্ত হবে। ফলে সুপেয় পানি পান ও ব্যাবহার করা জরুরী।
মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, প্লান্টগুলো এলাকাবাসিদের অসচেতনতার জন্য নষ্ট হয়েছে। এই প্লান্টগুলি রক্ষনাবেক্ষনের জন্য সমিতি করে দেওয়া হয়েছে কিন্তু তারা রক্ষনাবেক্ষন করেনা। প্লান্টগুলি যাতে আবার চালু হয় তার জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী।