মেহেরপুরে সমাজে সেবা কর্মী ফারুকের খুনের বিষয়ে আটক-২ । পুলিশের প্রেসব্রিফিং
মেহেরপুর সমাজসেবা কর্মী ফারুক আহমেদ হত্যার দুই আসামি আটক। এ হত্যাকন্ড সংক্রান্তে প্রেস ব্রিফিং করেছে মেহেরপুর জেলা পুলিশ। আসামি ফারুক হোসেন(৪৮) ও তার সহযোগী তাতিপাড়া দাউদ আলী (৪৫)কে আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং দেন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি। প্রেসব্রিফিং এ জানা গেছে, সমাজসেবার মাঠকর্মী ফারুক আহমেদ নিহত হওয়ার পর তার স্ত্রী নাজমা খাতুন থানায় হাজির হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করলে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর ২৭।
ধারা ৩০২/৩৪। মামলাটির তদন্তভার নেন পুলিশ পরিদর্শক নিরস্ত্র রাসুল সামদানী আজাদ। তদন্তের এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তি চর্চার মাধ্যমে শহরের থানাপাড়ার আব্দুল লতিফের ছেলে আসামি ফারুক হোসেন কে গ্রেফতার করা হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়েছে আসামি ফারুক হোসেন মালয়েশিয়াতে ছিলেন।
সেখানে থাকা অবস্থানকালে তার স্ত্রী বিজলী খাতুনের নিকট টাকা প্রেরণ করতো। আসামি ফারুকের স্ত্রীর সঙ্গে নিহত ফারুকের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২ বছর পূর্বে আসামি ফারুক দেশে ফিরে আসলে তার স্ত্রীর অনৈতিক প্রেমের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে। এই বিষয় নিয়ে আসামি ফারুক হোসেন ও তার স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি হয়। পরে আসামি ফারুক হোসেন ঢাকার একটি কোম্পানিতে সিকিউরিটি চাকরি করতে ঢাকায় চলে যায়।
আসামি ফারুক এর পারিবারিক অশান্তির কারণে তার স্ত্রী বিজলি খাতুন বাপের বাড়িতে চলে যায়। আসামি ফারুক হোসেন ও তার সহযোগী তাতিপাড়া কাছেদ আলী ছেলে দাউদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে নিহত ফারুক আহমেদ কে মারার জন্য পরিকল্পনা করে। সেই অনুপাতে দেশীয় হাসুয়া ও চাপাতি দিয়ে নিহত ফারুককে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সে মৃত্যুবরণ করে।
এবিষয়ে আসামি ফারুক হোসেন তার দোষ স্বীকার করে মেহেরপুর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। আসামি ফারুক এখন জেলহাজতে আছে অপর আসামি দাউদকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম, ডিআই-১ ফারুক হোসেন, সদর থানার ওসি শাহ দারা খান, মেহেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি তোজাম্মেল আযম, সাধারন সম্পাদক মাহাবুব চাদু, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানাসহ সাংবাদিককেরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের তাঁতীপাড়ায় মেহেরপুর শহর সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাঠকর্মী ফারুক হোসেন (৩৯) কে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
পরদিন তার স্ত্রী নাজমা খাতুন বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকান্ডের রহস্য ও আসামিদের আটকের চেষ্টা চালায়।