মেহেরপুরে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে আশার আলো দেখছে চাষি
মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে বস্তা পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে আদা চাষ । পরিত্যাক্ত জমিতে এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করে আশার আলো দেখছে চাষী। গাছতলায়, বাড়ির আঙিনায়, অন্যান্য ফসলের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। বস্তায় আদা চাষে কম খরচ ও লাভ বেশি হওয়ায় পরিবারের খরচ মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছে চাষীরা। কৃষি প্রযুক্তির এই আধুনিকায়নে কৃষকের প্রতি ইঞ্চি জায়গা ব্যবহারে এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করে লাভবান হবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
চাষীর প্রতি ইঞ্চি জায়গা চাষের আওতায় আনতে সদর উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে পরিত্যাক্ত জমিতে বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ পরিক্ষাামুলক আমঝুপি গ্রামের দু’জন চাষী জান্নাতুল ফেরদৌস ও বোরহান হোসেনের বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত জায়গায় ৮০০টি বস্তায় চাষ করেছে আদা। গাছগুলো বেশ হৃষ্টপুষ্ট কোনো রোগবালাই নেই। ইতোমধ্যে আদার গুটি নিয়েছে। বস্তায় আদা চাষ করলে মাটি নরম থাকে, ঘাস কম হয়, বর্ষাকালে পানি জমে না, স্যাঁতসেঁতে হয় না, ছত্রাক ও রোগ বালাই কম হয়, আদা পচে না। ফলে, আদার ফলন বেশি হবে এবং কৃষক লাভবান হবে এমন ধারনা চাষীদের।
আমঝুপি গ্রামের চাষী জান্নাতুল ফেরদৌস জানায়, প্রথমে একটি বস্তায় ৩ ঝুড়ি মাটি, ১ ঝুড়ি বালি, ১ ঝুড়ি গোবর সার ও ২৫ গ্রাম দানাদার কীটনাশক মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে বস্তায় ভরে তিন টুকরো অঙ্কুরিত আদা পুঁতে দিয়ে এই চাষ করা হয়েছে। এতে বস্তা প্রতি খরচ হয়েছে ২০-২৫ টাকা।
একই গ্রামের চাষী বোরহান হোসেন জানায়, যদি প্রতি বস্তায় এক কেজি করেও ফলন পাওয়া যায় তবে বাজারে ১০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয় তাহলে তার ৪০০ বস্তায় ৪০ হাজার টাকার আদা বিক্রি করতে পারবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, বস্তায় আদা চাষ একটি প্রযুক্তির নতুন ধারণা। কৃষক নতুন এই ধারণা নিয়ে বস্তায় আদা চাষের দিকে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আদা মসলা জাতীয় ফসল, প্রত্যেকেই যদি বসতবাড়িতে বা পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করেন তাহলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বাড়তি আয় করতে পারবেন। চাষীদের এই আগ্রহকে কাজে লাগাতে মাঠ পর্যায়ে চাষীদের সার্বিক সহযোগীতা সহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।