মেহেরপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে মাল্টা চাষ

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  04:10 PM, 30 September 2024

মেহেরপুরে দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মাল্টা লেবু চাষ। কম খরচে দীর্ঘ মেয়াদি লাভ পাওয়ায় অনেকেই ঝুকছে মাল্টা চাষে। স্বাদ বেশ ভালো হওয়ায় বাজারেও বেশ চাহিদা রয়েছে সবুজ মাল্টার। চারা রোপনের ২ বছর পর থেকে প্রায় দশ বছরের অধিক সময় ধরে ফল সংগ্রহ করা হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ থেক পুরো অক্টোবর মাস জুড়ে মাল্টা লেবু সংগ্রহ ও বাজার করা হয়। ফড়িয়ারা এসে পাইকারি ধরে জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায় ফলে বাজারজাতের ঝামেলা নেই চাষিদের। চলতি মৌসুমে ১৬শ থেকে ১৭শ টাকা মন পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরা বিক্রি হচ্ছে সাইজ ভেদে ৭০, ৮০ ও ১০০ টাকা কেজি। বারি-৪, বরি ১, কোরিয়ান মাল্টা, ও বারোমাসি ভিতেনামি মাল্টার চাষ করছে চাষিরা। পেশাদার চাষি থকে শুরু করে সৌখিন চাষি ও বেকার যুবকরা এখন মাল্টা চাষ করে বেশ সাবলম্বি হয়েছে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ি ২০২০ সাল থেকে মেহেরপুরে বানিজ্যিকভাবে সবুজ মাল্টার চাষ শুরু হয়। সে সময় জেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়। গত চার বছরে মাল্টার চাষ বেড়ে প্রায় ৬ গুন। বর্তমানে মেহেরপুরে প্রায় ৩শ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ করা হচ্ছে।

মাল্টার চাষিরা জানান, চারা রোপনের ২ বছরের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। ১ বিঘা নিজস্ব জমিতে চারা কেনা থেকে শুরু করে জমি তৈরি, চারা রোপন ও প্রথম ফল আসা পর্যন্ত পরিচর্যাসহ খরচ হয় ২০-২২ হাজার টাকা। তুলনামূলক উচু ও বেলে দোঅঁাশ মাটিতে মাল্টা চাষ ভালো হয়। এক বিঘা জমিতে প্রথম তিন বছর ১শ গাছ লাগানো যায়। পরবর্তিতে গাছের সংখ্যা ৭০-৮০তে নামিয়ে আনা হয়।

মেহেরপুর সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের মাল্টা চাষি সাহনেওয়াজ সোহান বলেন, দেড় বিঘা মাল্টায় প্রথম দিকে হাজার ত্রিরিশেক খরচ করেছে। দু বছর পর থেকে ফল সংগ্রহ করা শুরু হয়েছে। জমি ও জাত ভালো হলে বিঘায় প্রতি সিজনে প্রায় ৭০-৮০ মন ফল পাওয়া যায়। এবার দেড় বিঘা জমিতে আশা করছি প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মত মাল্টা বিক্রি হবে।

সদর উপজেলার হরিরামপুর গ্রামের বুলবুল হোসেন বলেন, বারি ৪ মাল্টা চাষ করেছি। ফলনও বেশ ভালো তবে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গতবারের সমান দাম। মেহেরপুর চাষ বেড়েছে তাই দাম আগের মতই আছে। এরকম দাম থাকলে অনেক লাভ হবে। কারন মাল্টা চাষে প্রথম দিকে খরচ, তারপর শুধু কিটনাশক প্রয়োগ আর আগাছা পরিষ্কার করার খরচ ছাড়া আর তেমন কোন খরচ নেই।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সুমি খাতুন জানান, গত কয়েক বছরে মেহেরপুরে মাল্টার চাষ বেড়ে কয়েকগুন। মেহেরপুরের মাটি ও আবহাওয়া ভালো হওয়ায় এখানকার মাল্টার স্বাদ মিষ্টি। রসও আছে প্রচুর। আমরা কৃষকদের মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। মেহেরপুরের মাল্টা মেহেরপুর ছাড়িয়ে অন্য জেলায়ও বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :