মেহেরপুরে গাছ রেখেই সড়ক নির্মান, ঘটছে দূর্ঘটনা
মেহেরপুর জেলার চাঁদবিল-কেদারগঞ্জ (মুজিবনগর) বাইপাস সড়কের মাঝখানে পাচঁটি কড়ুই গাছসহ সদর উপজেলার মধ্যে ১১৪টি গাছ রেখে রাস্ত্মা নির্মান শেষ করা হয়েছে। চাঁদবিল মরগাংনী নামক মোড়ে সড়কের মাঝখানে পরপর পাচঁটি গাছ রয়েছে বিপদজনক অবস্থায়। এছাড়াও শুকনো গাছসহ বিদজনক অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় ১১৪ টি গাছ। ফলে প্রতিনিয়িত দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সর্বশেষ ৩০ মার্চ একই স্থানে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পাশের পুকুরে পড়ে যায়। এতে চালকসহ তার সহকারী মারাত্মক জখম হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি যে কোন বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন গাছগুলো অপসারণ করা হয়।
মেহেরপুর এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যায়ে সদর উপজেলার চাঁদবিল থেকে মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ পর্যন্ত্ম ১৬.৪ কিলোমিটার এবং ১৮ ফিট চওড়া বাইপাস সড়ক নির্মান শেষ হয়েছে ২০১৮ সালের জুন মাসে। সে সময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছগুলো কাটার অনুমতি চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হলেও এখনো পর্যন্ত্ম কোন প্রতিউত্তর না আসায় গাছগুলো কাটা সম্ভব হয়নি। জেলা পরিষদ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এই গাছের মালিকানা দাবি করলেও গাছ কাটার ÿেত্রে তাদের কোন হাত নেই বলে জানাই উভয়ই।
এছাড়াও ঝুকিপূর্ন হলেও ওই মোড়ে বা অন্যকোন স্থানে সতর্কীকরণ কোন লেখা বা চিহৃ সংশিস্নষ্ট কোন দপ্তর সেখানে স্থাপন করেনি। জীবনের ঝুকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে মুজিবনগর যাচ্ছে অনেক মাল বোঝাই ও যাত্রি বোঝাই পরিবহন।
রিয়াজ নামের এক ট্রাক চালক জানান, এই সড়কে যেদিন প্রথম গাড়ি নিয়ে আসি সেদিনই দুর্ঘটনায় পড়তে যাচ্ছিলাম। মোড়ের উপর একপাশে সড়কের মাঝ খানে গাছ অপর পাশে পুকুর। ফলে অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমাদের মুজিবনগর যাওয়া এই রাস্ত্মা দিয়ে সহজ হয়। শহরে প্রবেশ করা লাগেনা। কিন্তু ঝুকিপূর্ণ গাছের কারনে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মীত এই রাস্ত্মা যেন কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
স্থানীয় কোলা গ্রামের বকতিয়ার খাইরম্নজ্জামান নামের এক চা দোকানী জানান, সড়কের উপর গাছ থাকায় এই সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মরাগাংনীর মোড়েই আমার চা দোকান গত চার বছরে নিজ চোখে একই জায়গায় দূর্ঘটনা দেখেছি অনেক।
মেহেরপুর এলজিইডির উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রহমান জানান, সড়ক নির্মান শুরম্নর সময় থেকে আমরা ওই গাছ গুলোর মালিক খুজে পাচ্ছিলাম না। পরে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের কাছে পৃথকভাবে চিঠি পাঠালে তারাও কেউ দাবি করেনি। পরবর্তীতে আমরা বিভাগীয় কমিশনার এর কাছে গাছের বিষয়ে চিঠি লিখে জানতে পারি গাছগুলো ১ নম্বর খতিয়ান ভুক্ত।
আব্দুর রহমান আরও বলেন, চিঠি পাওয়ার পর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে একটি টিম গাছগুলো পরির্দশন করে যায়। তারপরও গাছগুলো কাটার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত্ম না দেওয়ায় আমরা গাছগুলো সড়কের মাঝখানে রেখেই সড়ক নির্মান শেষ করি। নির্দিষ্ট সময়ের কাজটি শেষ করার তাগাদা ছিল।
মেহেরপুর সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা জাফর উলস্নাহ জানান, চাঁদবিল-কেদারগঞ্জ সড়কের ওই গাছগুলোর মালিকানা তাদের না। তবে জেলা প্রশাসন থেকে গাছ কাটার বিষয়ে বললে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা ইচ্ছা করলেই গাছগুলো কাটতে পারিনা। উন্নয়ন সভার মিটিংএ আমি এইসব বিপদজনক গাছ অপসারনের কথা উলেস্নখ করেছি। এর আগেও আমরা উর্দ্ধতন কতৃক্ষকে এই বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গাছ অপসারনের কোন নির্দেশনা পাইনি।