মেহেরপুরে ইটভাটা মালিকদের জিম্মি করে অর্থবাণিজ্য

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  08:45 PM, 08 March 2021

মেহেরপুর ইটভাটা মালিকদের জিম্মি করে অর্থবাণিজ্যসহ হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মেহেরপুরের কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের বিভাগীয় কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে এর বিরুদ্ধে।
এসবের প্রতিবাদ করলেই ইটের ট্রলি আটক করে দিনের পর দিন ফেলে রাখা হচ্ছে। আবার কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে কে খুশি করেই ভ্যাট বকেয়া রেখেও দিনের পর দিন ব্যবসা করছে অনেকেই।

মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইটভাটা মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান,
২০০৪ সালের মৌসুমি ইটভাটা বিধি মালার রাজস্ব বোর্ড গেজেটে ইটভাটা মালিকদের ৩১ ডিসেম্বর ১ম কিস্তির ৩৫%, ১৫ ফেব্রæয়ারি ২য় কিস্তির ৩৫% ও ৩১ মার্চের মধ্যে অবশিষ্ট ৩০% ভ্যাট পরিশোধের নিয়ম আছে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে ইটের গাড়ি আটক করে পূর্ণাঙ্গ ভ্যাট আদায় করছে কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে। আবার তাকে খুশি করলেই ছাড় পাচ্ছে অনেকেই। সেক্ষেত্রে কোন নিয়ম নীতি লাগছেনা।

গাংনী উপজেলা যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার মজিরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য ঠিকাদারের মত আমিও ইটের মূল্য কম থাকার সময়ে বিভিন্ন ইটভাটা থেকে ইট ক্রয় করে মজুত রেখেছি। পরে আমার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন মত ইট নিজস্ব পরিবহনে করে সরকারি রাস্তা, স্কুল-কলেজ ভবন ও ব্রীজ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করছেন।

কিন্তু গত বৃহস্পতিবার কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে চোখতোলা এলাকায় ট্রলি আটক করে গাংনী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। ইটভাটার ভ্যাট পরিশোধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।

গাংনী বামুন্দী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের সততা ইটভাটা মালিক ইছার উদ্দীন জানান, তার ইটভাটা ২০১৮/১৯, ২০১৯/২০ ও ২০২০/২১ এই তিন অর্থ বছরের জন্য নিশিপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে দেলোয়ার হোসেনের কাছে লিজ (বন্দবস্ত) দেয়া হয়। তিন বছর ইটভাটা চললেও ২০১৯/২০ অর্থ বছরে ইটভাটা বন্ধ রয়েছে মর্মে কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের অফিস প্রত্যায়ন দিয়েছে।

ইটভাটা বন্ধের প্রত্যায়ন দিয়ে লাখ লাখ টাকা অর্থবাণিজ্য করছে কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাট অফিস। টাকার বিনিময়ে চালু ইটভাটা বন্ধ দেখিয়ে প্রত্যায়ন দেওয়ার ঘটনায় বিচারের দাবিতে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, দূর্ণীতি দমন কমিশন সহ কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত দেয়া হয়েছে।

গাংনী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, গত বছরে গাংনী উপজেলায় ৫৪টি ইটভাটা চললেও মাত্র ২৭টির কাছে ভ্যাট আদায় করেছে। বাকি ইটভাটায় ভ্যাট না নিয়ে বেপরোয়া অর্থবাণিজ্য করছে কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের কর্মকর্তারা। তিনি আরো বলেন, ইটভাটা ভ্যাট ও নীতিমালা সম্পর্কে মালিকদের অবগত করা হচ্ছেনা। আবার কতিপয় ইটভাটা মালিকদের সাথে গোপনে চুক্তি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে মেহেরপুরের কাস্টমস, এক্সাসাইজ ও ভ্যাটের বিভাগীয় কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দে বলেন, অফিসে আসুন কথা হবে। গত বৃহস্পতিবার উনার অফিসে যেয়ে ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করার পর উনি সাংবাদিকদের সাথে দেখা করবেননা বলে জানান।

আপনার মতামত লিখুন :