মেহেরপুরে আামন ধানের নতুন উৎপাত কারেন্ট পোকা
কেউ ধান কাটার তারিখ ঠিক করছেন, কেউ আবার ক্ষেতের শেষ মুর্হূতের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ঠিক এমন একটা সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বাদামি গাছফড়িং পোকা চুষে খাচ্ছে ধান গাছের রস। ফলে মারাত্মক ফলন বিপর্যয়ে পড়ছে আক্রান্ত ধান ক্ষেত। স্থানীয়ভাবে এ পোকা কারেন্ট পোকা নামে পরিচিত। এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ হলেও মেহেরপুরে এটাই প্রথম। কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এতে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় এবার আমন ধান আবাদ হয়েছে হয়েছে আমন ধান কাটা কার্যক্রম। এর মধ্যেই কারেন্ট পোকা নতুন দুশ্চিন্তায় ফেলেছে এখানকার কৃষকদের। গত বছর বোরো মৌসূমে বয়ে যাওয়া উচ্চ তাপে ফলন বিপর্যয়ে পড়েছিলেন কৃষকরা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন আবাদের জোর দিয়েছিলেন অনেকে। তবে এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমন ধান আবাদে কৃষকরা পড়েছেন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে। সেই চ্যালেঞ্জের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কারেন্ট পোকা। ধান গাছের গোড়ার দিকে বসে চুষে খাচ্ছে রস। এতে চিটায় পরিণত হচ্ছে ধানের শীষ। দলে দলে অসংখ্য পোকা এক রাতেই যেন সাবাড় করে দিচ্ছে পুরো ক্ষেত। প্রতিকারের ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই বিনষ্ট হচ্ছে আক্রান্ত ক্ষেতের সব ধান। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্প্রে দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না ধানের ক্ষতি।
গাংনীর চৌগাছা গ্রামের কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, দেড় বিঘা জমিতে কারেন্ট পোকা লাগার পর কীটনাশক স্প্রে করেছিলেন। তবে তার আগেই আক্রান্ত হওয়ায় ধানের শীষ বের হওযার সময় সব চিটায় পরিণত হয়েছে। মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দীন জানান, এ মাঠের বেশ কিছু ক্ষেত আক্রান্ত। যার পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফলে চাষীরা ধানের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কারেন্ট পোকা দমনে আগে থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে সম্পর্কে চাষীদের সজাগ করতে হবে।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের সেচ পাম্প মালিক আব্দুল হান্নান জানান, আমন ধানের অনেক জমি কারেন্ট পোকায় ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। ধান গাছ শুকিয়ে খড়ে পরিণত হয়েছে। চাষীরা গোখাদ্য হিসেবে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক চাষী এবার ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। ধান আবাদে বারবার ক্ষতির মুখে পড়ে হতাশা বাড়ছে কৃষককুলে। তাই দেশের প্রধান এই খাদ্য উৎপাদন নিবিঘ্ন করতে আরও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে কৃষি কর্মকর্তাদের প্রতি দাবি জানালেন কৃষকরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, পোকামাকড়ের জন্য অনুকুল আবহাওয়া কারেন্ট পোকা আক্রমণের জন্য দায়ী। তবে ধানের জমিতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক প্রয়োগ ও প্রযুক্তির ব্যবহার কারেন্ট পোকা ঠেকাবে বলে মনে করছেন তিনি।