মেহেরপুরে আমন ধানে কারেন্ট পোকা আক্রমণ দিশেহারা কৃষক, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সংশয়

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  11:10 AM, 02 October 2024

মেহেরপুরে চলিত মৌসুমে আমন ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে। একদিকে তেল, সার, কীটনাশক ও উৎপাদনের মজুরী বৃদ্ধির ফলে এমনিতেই বেকায়দায় রয়েছে কৃষকরা এর উপর পোকার আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, ওকার কারণে কিছুটা ক্ষতি হলেও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।

জেলায় উৎপাদনের মজুরি খরচ, সার, কীটনাশকের বাড়তি দামেই নাভিশ্বাস। এর মধ্যেই আবার আমন ধানে নতুন করে কারেন্ট পোজার আক্রমণ। যার ফলে কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এই পোকার আক্রমণের কারনে প্রথমে ধান গাছপুরো শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। পরবর্তীতে ধানের শীষ পড়লে দানা বাধার পরিবর্তে ধান শুকিয়ে চিঠি হয়ে যায়। এতে উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলেও খুব একটা কাজে আসেনি। তাই জেলায় এবার মাঠের পর মাঠ জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তার ফলে বিপর্যয় নেমে এসেছে আমন ধানের লক্ষমাত্র অর্জনের পথে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে চলিত মৌসুমে মেহেরপুরে আমন ধান চাষ হয়েছে ২৬ হাজার ৮শ ৬০হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০ হাজার মেট্রিক টন চালের। প্রতি টন চালের বর্তমান বাজার মূল্য সরকারি দাম অনুযায়ী ৪৬ হাজার ২০০ টাকা। সে হিসেবে চলিত মৌসুমে জেলায় ৩শ ৯২ কোটি ৮০ লাখ টাকার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো।

মুজিবনগর উপজেলার নোয়াখালী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, জমিতে ধান আবাদ করেছি প্রকার আক্রমণে ধান চাই সব শেষ হয়ে গেছে এখন খরচ উঠছে না।

সদর উপজেলার শোলমারী গ্রামের কৃষক রুবেল হোসেন জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ। অনাবৃষ্টির কারণে ধানে কারেন্ট প্রকার আক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ ক্ষতির সম্মুখীন। এলাকার হাজার হাজার কৃষক আজ পথে বসে চলেছে কারেন্ট প্রকার আক্রমণে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করা হয়নি।

গাংনী উপজেলার বামন্দি গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, কৃষি অফিসার কেউ বা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদের কখনো কোনো সময় পরামর্শ দেওয়া হয় না আমরা কেবল বিভিন্ন কোম্পানির লোকজন এসে আমাদের পরামর্শ দিয়ে থাকে। কাজের দেওয়া পরামর্শের ভিত্তিতে তাদের কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করেও আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। একাধিকবার কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি সেই সাথে আমাদের কোন প্রকার সহযোগিতাও করেননি। ধান ভালো হয়নি আমরা খাব কি? কোথা থেকে পাব ঋণের টাকা। আজ আমরা সর্বসান্ত।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান,জেলার বিভিন্ন মাঠে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিলেও জেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়েছে। যার ফলে তা অনেকটাই দমন করা সম্ভব হয়েছে। তবে এবার পোকার কারণে আমন ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সেটা সমস্যা হবে না। এতে চাষীরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অন্য চাষের মাধ্যমে তা পুষিয়ে নিতে সম্ভব হবে।

আপনার মতামত লিখুন :