মেহেরপুরের কৃষি খামার যখন বিনোদন কেন্দ্র
বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে মেহেরপুরে আমঝুপি বিএডিসির ডাল ও সবজি বীজ খামার্র। খামারে রোপিত সূর্ষমুখি ফুল দেখতে এখন প্রতিদিন ভিড় করছেন হাজারো ফুল প্রেমীরা। প্রকৃতির এই আবিরাম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিদিনই সূর্যমূখী এই ফুলের সমারাহ দেখতে ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমী ও তরুন-তরুনীরা। দল বেধেঁ বন্ধু-বান্ধবী কেউ বা পরিবার পরিজন নিয়ে সূর্যমূখী ফুলের বাগানে সেলফি বা ছবি তোলায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন দর্শনার্থীরা।
সরোজমিন খামারে গিয়ে খামার কর্তপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বছর জুড়ে নানা ধরনের ডাল ও সবজির বীজ উৎপাদন হয়ে আসছে আমঝুপি বিএডিসির এই খামারে। উদ্যেশ্য সূর্যমূখীর তেল ও বীজের চাহিদা পূরনের জন্য এই চাষের উদ্দ্যোগ। কয়েক বছরে সোস্যাল মিডিয়ার বদৌলতে কৃষি খামার ফুল প্রেমিদের পদচারনায় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মেহেরপুরের আশপাশের কয়েক জেলার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন এই সূর্ষ মুখি বাগানে। দুচোখ যতদূর যায় শুধু ফুলের সমারাহ, এ যেন হলুদ আর সবুজের মিলন মেলা। বাতাসে দোল খেয়ে ফুলগুলো যেন আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সৌন্দর্য উপভোগ করার। ফুলের এই আমন্ত্রনে দিনভর এই সূর্যমুখী বাগানে ভিড় করছেন কয়েক হাজার মানুষ। দুপুরের পর থেকেই সূর্যমুখী বাগান নানান বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সূর্যমুখী ফুলের এ বাগানটি এখন সৌন্দর্য প্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। সূর্য্যরে মতো হাঁসি দেওয়া হলুদ গালিচা ছড়ানো ফুলের সৌন্দয্যে আকৃষ্ট হয়ে প্রতিদিন বাগানে ভিড় করছেন ভ্রমন পিপাসুরা। কেউ আবার প্রিয় মুহূর্তকে মোবাইলফোনের ভিডিওতে স্মৃতি হিসেবে ধারণ করে রাখছেন। প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ফুলের সৌন্দর্য আর সৌরভ গ্রহণ করে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন বিনোদন প্রিয় পর্যটকেরা। কেউ বন্ধুদের সঙ্গে আসছেন, কেউ বা আসছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। শুধু মেহেরপুর জেলার মানুষই এই সৌন্দর্য উপভোগ করছেন না আশেপাশের জেলা থেকেও আসছে দর্শনার্থী। ফুলের সৌরভ উপভোগ করে খুশি দর্শনার্থীরা।
খামারের উপ-সহকারী পরিচালক আবু তাহের সরদার গাংনীর চোখ’কে জানান, গত কয়েক বছর ধরে এই বীজ খামারে সুর্য্যমুখির বীজ তৈরীর জন্য আবাদ করা হয়। যখন ফুল ফোটে তখন দর্শনার্থীরা ভীড় করে। দর্শনার্থীরা যাতে ফুলের ক্ষতি না করে তার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে। তবে দর্শনার্থীরা ফুল দেখে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে সূর্ষমূখি চাষে।
তিনি আরো জানান, সূর্যমুখী একধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮ ফু) হয়ে থাকে, ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্য্যরে মত এবং সূয্য্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ। এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয়। তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভুমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্রকুলবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসাবে চাষ করা হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে আবাদ হচ্ছে। সূর্যমুখীর তেল ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।