ভূরুঙ্গামারীতে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রাদুর্ভাব, করোনা নিয়ে নতুন শঙ্কা
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বেড়েছে ভাইরাস জ্বরের প্রাদুর্ভাব। ঘরে ঘরে আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় সবাই। তবে এর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি। আশংকাজনক হারে বেড়েছে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতি পরিবারে কেউ না কেউ সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যথায় ভুগছেন।
উপজেলার ফার্মেসিগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিনে সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যাথার ওষুধ বিক্রি হয়েছে স্বাভাবিকের চাইতে কয়েকগুন বেশি। সরবরাহের কমতি থাকায় এসব রোগের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। পুরো উপজেলায় হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় প্রসাশন। এরই মধ্যে এসব উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বেশ কযেক জন। করোনার নমুনা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলায় করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে পারছেনা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ নয় জনের নমুনা পরীক্ষায় চারজন রোগীর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনা পজিটিভ হয়েছেন ৮৮ জন। এদের মধ্যে মারা গেছেন একজন। সর্দি জ্বর, গলা ব্যাথা নিয়ে গত সাত দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৭০ জন রোগী। জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন বহিঃর্বিভাগে ১০০ থেকে ১২০ জনের মতো রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলায় হঠাৎ করে করোনা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু পারাপার ও স্থলবন্দরে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের অবাধ চলাচলকে দায়ী করছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু সাজ্জাদ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘সংক্রমণের এই হার উদ্বেগজনক। তবে, জ্বর সর্দি মানেই করোনা নয়। এগুলোর বেশির ভাগই সিজনাল ফ্লু অথবা টাইফয়েড। সর্বশেষ ১৫ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। তাদের নমুনা ফলাফল হাতে পেলেই প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে। সংক্রমণ প্রতিরোধে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি প্রয়োজনীয় সকল কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সোনাহাট স্থলবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মেডিকেল টিম তৎপর রয়েছে।’ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন, ‘উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সীমান্তে কড়াকড়ি বিধিনিষেধ আরোপের জন্য বিজিবির কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন থাকায় সোনাহাট স্থল বন্দরের কার্যক্রম এখন অনেকটাই সীমিত। তারপরও যে কয়েকটি মালবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, সেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মেডিকেল টিম।’