বিএনপিসহ ৩৯ দলের যৌথসভায় যে সিদ্ধান্ত এলো
বিএনপিসহ দেশের ৩৯টি বিরোধী রাজনৈতিক দল যৌথসভা করেছে। সেই সভা থেকে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়েছে দলগুলো।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর তোপখানা মোড়ে শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এই সভায় নেতারা বলেন, ‘আমরা রাজপথে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করে আসছি। এজন্য আমরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেফতারকৃত সব রাজবন্দিদের মুক্তি এবং বিদ্যমান অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সরকার ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কারের দাবিতে যুগপৎ ধারায় এক আন্দোলনে আছি। এই দাবিগুলো ইতোমধ্যে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।’
তারা বলেন, ‘গণদাবির এই আন্দোলনে আতংকগ্রস্ত হয়ে পরিকল্পিত সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা ঘটিয়ে সরকার ও সরকারি দল গত ২৮ অক্টোবর বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর মহাসমাবেশ পন্ড করে দেয়। বিএনপিসহ বিরোধীদের ওপর এই দায় চাপিয়ে গত এক মাস দমন নিপীড়ন ও গ্রেফতারের পথে দেশব্যাপী তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার ও সরকারি দলের এইসব নৃশংসতায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য আমরা গভীর শোক প্রকাশ করি। নিহত, আহত ও কারাবন্দিদের পরিবারের প্রতি আমরা সমমর্মীতা প্রকাশ করছি।’
নেতারা আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে উল্লেখ করতে চাই যে, সরকার যদি জেদ, অহমিকা নিয়ে জবরদস্তি করে নির্বাচনের নামে আরেকটি তামাশা মঞ্চস্থ করতে চায়, তাহলে সরকারের এই অশুভ তৎপরতা প্রতিরোধ করা ছাড়া দেশবাসীর সামনে অন্য কোনো পথ থাকবে না।’
তারা বলেন, ‘আমরা সরকার ও সরকারি দলের সব ধরনের উসকানি, সহিংসতা ও পরিকল্পিত নাশকতা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে চলমান গণআন্দোলন-গণসংগ্রামকে বিজয়ের পথে এগিয়ে নেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই। এই আন্দোলনে সব বিরোধী রাজনৈতিক দল, শ্রেণি-পেশা ও সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানাই।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুতফর রহমান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি মুহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব মো আবুল কাশেম, এলডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. নেয়ামুল বশির, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান পারভীন নাসের ভাসানী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল ইসলামসহ অন্য দলগুলোর শীর্ষনেতারা।