বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মাথায় ওঠা যুবক আটক, তিন পুলিশ সদস্য ক্লোজ

গাংনীর চোখগাংনীর চোখ
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  12:17 AM, 06 February 2022

কুষ্টিয়া শহরের প্রান কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মাথায় উঠে বসে থাকা যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে ওই যুবক ভাস্কর্যের বঙ্গবন্ধুর মাথায় উপরে ওঠে। পরে স্থানীয়রা টাকা দেয়ার কথা বলে তাকে নিচে নামায়। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। ওই ব্যক্তিকে আটক করতে শুরু হয় অভিযান।

বিকাল ৫টার দিকে তাকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।

স্থানীয়রা বলেন, শনিবার বিকাল ৩টার দিকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক যুবক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিকৃতি, ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি এবং ৬ দফা দাবি আন্দোলনের বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য বেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটির মাথায় ওঠে দাঁড়িয়ে ও বসে থাকে। স্থানীয়রা তাকে টাকা দেখালে সে নিচে নেমে আসে এবং শহরে ভিতর চলে যায়। পরে উপস্থিত অনেকে ওই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। পুলিশের উপস্থিতিতে এঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে রাত ২টা ১৬ মিনিটে দুই মাদ্রাসা ছাত্র হেঁটে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যস্থলে আসেন। এরপর ভাস্কর্যের গা ঘেঁষে থাকা মই বেয়ে উপরে উঠে পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর হাতের উঁচু তজুনে আঘাত করেন। হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে করে ভাস্কর্যের হাত ও পরে মুখের অংশে ভাঙচুর করে। এরপর থেকে সেখানে সার্বক্ষণিক পুলিশের একটি টিম দায়িত্ব পালন করে আসছে।

শনিবার দায়িত্বরত টিমের নেতৃত্বে ছিলেন এএসআই বিকাশ। তিনি বলেন, আমি দুপুরের খাবার খেতে গিয়েছিলাম। এসময় একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বেয়ে উপরে ওঠে। পরে স্থানীয়রা টাকা দেয়ার কথা বললে সে নেমে আসে এবং পালিয়ে যায়। পুলিশের টিম সবসময়ই ডিউটি করে। আমার নেতৃত্বে পুলিশের সদস্য প্রদীপ ও মহিদুল দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু তারা বিষয়টি বুঝতে পারেনি।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম বলেন, এঘটনায় ওই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে। তারা ঘটনার সময় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যস্থলে দায়িত্বে ছিল। বিষয়টি তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এ দিকে এ ঘটনার পর ৭১ টিভির ক্যামেরা পার্সন কোহিনূর ও এটিএন নিউজের ক্যামেরা পার্সন রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয় কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। পরে কুষ্টিয়ার মুলধারার সাংবাদিকেরা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্তান নেন। এ সময় সেখানে ছুটে যান কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাব্লু। তাঁরা পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বেশকিছুক্ষন আলোচনার পর এবং তাঁদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে ছাড়া পান ৭১ টিভির ক্যামেরা পার্সন কোহিনূর ও এটিএন নিউজের ক্যামেরা পার্সন রুবেল।ছাড়া পাওয়ার পর কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর ও সাধারণ সম্পাদক সহ সকল সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ওই দুই সাংবাদিক।

 

সূত্রঃআপডেট কুষ্টিয়া।

আপনার মতামত লিখুন :