প্রথম রাজধানীর আব্দুল মোমিন চৌধুরী আর নেই…..
মেহেরপুরের মুজিবনগরের ভবরপাড়া গ্রামের আব্দুল মোমিন চৌধুরী (৮৫) আর নেই। বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে গেল রাতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি শেষ নি:স্বাস ত্যাগ করেন(ইন্না লিল্লাহি অইন্নাইলাহি রাজিউন)।
আব্দুল মোমিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার/মুজিবনগর সরকার/প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে অসামান্য অবদান রয়েছে এই বীরের। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
১৭ এপ্রিল ১৯৭১ এ বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনে যার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা ছিল তার নাম আব্দুর মোমিন চৌধুরী। শপথের আগের কয়েকদিন থেকে মঞ্চের জন্য বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসা, এলাকার মানুষ জড়ো করা এবং তৎকালীন এসডিও তৌফিক-এ-ইলাহি চৌধুরীরর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ বেগবান করা এবং ভারত থেকে ত্রাণ সংগ্রহ ও এসডিও’র কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে তৎকালীন ভবরপাড়া সংগ্রাম কমিটি। যে কমিটির আহবায়ক হিসেবে সততা, নিষ্টা ও নিরলস শ্রম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতা করেন আব্দুল মোমিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করতে গিয়ে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করা হয়নি। ফলে মেলেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি। তবে বৈদ্যনাথতলা তথা মুজিবনগরের ইতিহাসের সাথে আজীবন মিশে থাকবে আব্দুল মোমিন চৌধুরীর নাম।
জানা গেছে, আব্দুল মোমিন চৌধুরী প্রায় ৩০ বছর ধরে বাগোয়ান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন বলিষ্ট হাতে। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়েছেন দূর থেকে বহুদূর। সম্মান স্বরুপ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও উপদেষ্টা পদে আসিন হন তিনি।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা স্বত্তেও আব্দুল মোমিন চৌধুরী ছিলেন নিঃঅহংকার ও সাদাসিদে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন মোহ তাকে আকৃষ্ট করেনি। আমৃত্যু তিনি স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছেন।
বুধবার(৫-সেপ্টেম্বর) বাদ আছর ভবরপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহ আত্মার মাগফেরাত কামনায় দো’আ কামনা করা হয়েছে।