পূর্ণযৌবনে ফিরছে মেহেরপুরের ভৈরব নদী
পূর্ণযৌবন পেতে যাচ্ছে মেহেরপুরের ভৈবর নদী। চলতি বছরের ২২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় পর্যায়ে ভৈরব নদী খননের উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। উদ্বোধনের চার মাসেই ৪৫ শতাংশ পুনঃখননের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ হবে বলে জানায় মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০১৫ সালে মেহেরপুরের ভৈরব নদীকে প্রথম পর্যায়ে ৭৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ২৯ কিলোমিটার পুনখনন করা হয়। এতে ভৈরবের পানির স্বাভাবিক গতি শতভাগ ফিরেছিল না। পরে পুনরায় মেহেরপুরের অংশে বাকি ৩০ কিলোমিটার ও চুয়াডাঙ্গার অংশে আরও ২৬ কিলোমিটার ভৈরব পুনঃখননের কাজ শুরু হয়।
মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি, মেহেপুরের রশিকপুর স্লুইচ গেট থেকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার ভৈরব পুনঃখনন করা হচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা।
ভৈরব নদী পুনঃখননের ফলে এলাকার মৎস ও কৃষিখাতে ব্যপক উন্নয়ন হবে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। গোপালপুর গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, আমার নদীর পাড়ে ৪ বিঘা জমি আছে। এর আগে বছরে একবার ফসল উৎপাদন করা যেত। এখন পুনখনন শেষ হলে সারা বছরই চাষ করতে পারবো। নদীর পানি সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারবো।
মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু বলেন, ভৈরব নদী রক্ষায় সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। মৃত প্রায় ভৈরব নদীটা পুনঃখনন হলে এলাকার জেলেরা জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। পাশাপাশি নদীর সেই চির চেনা রুপ আর সচ্ছ পানির প্রবাহ দেখতে পাবো।
মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহীনুজ্জামান বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা থেকে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত ভৈরব নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ খনন কাজ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যেই পুরো নদীটা খনন কাজ শেষ হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেন, মেহেরপুরের পানির লেয়ার নিচে নেমে গেছে। এতে কৃষকদের সেচ কাজ ব্যহত হচ্ছে। বর্তমান সরকার ৬৪ টি জেলায় ৫১৭ টি ছোট নদী ও খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে। এতে পানির স্তর উপরে উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। মেহেরপুরের ভৈরব নদী এর আগে ২০১৫ সালে ২৯ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩০ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজ চলমান আছে। পুনঃখনন সম্পন্ন হলে আমাদের ভৈরব পূর্ণযৌবন ফিরে পাবে। এতে মৎসজীবী থেকে শুরু করে কৃষক সাধারণ মানুষ সবাই উপকৃত হবে।